mahabubalkiran1's Profile Pictures album on Photobucket

Tuesday, 10 December 2013

রূপ চর্চার ৬ টি চরম ইজি টিপস , জেনে নিন ও কাজে লাগান !!!

১.কাঁচা দুধে তুলা ভিজিয়ে ঠোটে ঘষুন ,কালো দাগ তো উঠবেই সাথে ঠোটে গোলাপী ভাব আসবে ।

২.কনুইয়ের কালো দাগ দূর করতে লেবুর খোসায় চিনি দিয়ে ভালো করে ঘষুন ।চলে যাবে ।

৩.ব্রনের উপর রসুনের কোঁয়া ঘষে নিন ,তাড়াতাড়ি মিলিয়ে যাবে ।গ্যারান্টি ।

৪.পেডিকিউর মেনিকিউর আপনার কাছে ঝামেলা লাগে ?আরে আমি আছি না ?আজ থেকে যখনই আপেল খাবেন তখনই আপেলের খোসাটা হাত পায়ে ঢলে নিন ।ফর্সা হবে পরিস্কার হবে

৫.পায়ের গোড়ালী ফাটলে ,পেয়াজ বেটে প্রলেপ দিন ।ক্রীম কিংবা স্ক্রাব এর ঝামেলায় যেতে হবেনা ।

৬.প্রতিদিন টুথপেষ্ট দিয়ে দাত মাজেন কুলি করেন তবুও মুখে দুর্গন্ধ সৃষ্টি হয় ?ব্যাপার না ,নিঃশ্বাসের দুর্গন্ধ থেকে মুক্তি পেতে টানা দুইমাস নিয়মিত দুই কোঁয়া করে কমলালেবু খান ।

Monday, 2 December 2013

মুখে কালো দাগ

যদি মুখে কালো দাগ হয়ে যায় তাহলে শশা, পেঁপে আর টমেটোর রস সম পরিমাণে মিশিয়ে মুখে লাগান৷ এই লেপটা যখন শুকিয়ে যাবে তখন দ্বিতীয় বার আবার এই লেপটা লাগান৷ এই ভাবে তিন চার বার এই লেপটা লাগান৷

20 মিনিট লেপটা লাগিয়ে রাখার পরে মুখটা ভালো করে উষ্ণ জল দিয়ে ধুয়ে নিন৷ এই ভাবে দিন 15-20 আপনি ঐ লেপটা লাগাতে পারেন আপনার মুখের কালো ছাপ অনায়াসেই দূর হয়ে যাবে৷



Sunday, 7 July 2013

রোজায় দাঁতের যত্ন

রোজায় দাঁতের যত্ন:

রমজান মাসে দাঁতের যত্নে রাতে খাওয়ার পর এবং সেহরির পর দাঁত ব্রাশ করতে হবে। সেহরির শেষ সময়ের আগে অবশ্যই সবার ভালো টুথপেস্ট দিয়ে দাঁত ব্রাশ করতে হবে। সেহরির পর দাঁত ব্রাশ না করলে রমজান মাসে আপনার দাঁতের সার্বিক অবস্থা খারাপ পর্যায়ে যেতে পারে। তবে সবার মনে যে প্রশ্ন দেখা দেয় তা হলো, টুথপেস্ট বা টুথব্রাশ ব্যবহার করা যাবে কি না। এক কথায় উত্তর দিতে হলে, রমজান মাসে দিনের বেলায় টুথপেস্ট ব্যবহার না করাই ভালো। কারণ, টুথপেস্ট দিয়ে দাঁত ব্রাশ করার সময় অসাবধানতাবশত কোনো কারণে পেস্ট যদি গলার ভেতরে যায়, তাহলে সঙ্গে সঙ্গে রোজা ভেঙে যাবে। তাই টুথপেস্ট দিয়ে দাঁত ব্রাশ করা ঠিক নয়। এ ছাড়া টুথপেস্ট ব্যবহার করার সময় এর স্বাদ এমনিতেই গৃহীত হয়ে থাকে। আর কোনো কিছুর স্বাদ গ্রহণ করলে রোজা নষ্ট হবে না, কিন্তু মাকরুহ হয়ে যাবে। টুথপেস্ট ছাড়া অনেকে কয়লা বা ছাই দিয়ে দাঁত মেজে থাকেন।
দাঁতের যত্নে কয়লা ও ছাই এমনিতেই ব্যবহার করার ঠিক নয়। তার পরও অনেকে কয়লা ও ছাই ব্যবহার করে থাকেন। কিন্তু সবার একটি কথা জানা উচিত, কয়লা বা ছাই দিয়ে যদি দাঁত মাজা হয়, তাহলে যতই সাবধানতা অবলম্বন করা হোক না কেন, তা গলার ভেতর একটু হলেও চলে যায়। আর গলার ভেতর যাওয়ার অর্থই হলো রোজা ভেঙে যাওয়া। তাই রমজান মাসে নয় বরং অন্য সময়ও কয়লা বা ছাই ব্যবহার করা ঠিক নয়। রোজা রেখে টুথব্রাশ ব্যবহার করা যাবে কি না তা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। শুধু টুথব্রাশ ব্যবহার করার ওপর কোনো নিষেধ নেই। তবে যেহেতু মাসটি রমজান, সেদিক থেকে এ মাসে টুথব্রাশ ব্যবহার না করে দিনের বেলায় নিমের ডাল বা জয়তুনের ডাল দিয়ে মেসওয়াক করলে একদিকে যেমন দাঁতের যত্ন নেওয়া হবে, অন্যদিকে সুন্নতও পালন করা হবে।
হেলথ টিপস
ডাঃ মোঃ ফারুক হোসেন
ওরাল অ্যান্ড ডেন্টাল সার্জন

Wednesday, 5 June 2013

মাসের বাজার এক্ষুনি

মন্তব্য করুন
bazzar
‘সামনে রমজান মাস। একদিকে রোজা, অন্যদিকে কর্মব্যস্ত জীবন। এর মাঝে আবার যদি প্রতিদিন বাজারে যেতে হয়, তাহলে কী অবস্থা হয়, তা যিনি বাজার করেন তিনিই বলতে পারবেন। তাই এসব ঝামেলা থেকে মুক্ত থাকতে প্রতিবছর এ সময় পুরো মাসের প্রয়োজনীয় এবং বড় সব দ্রব্যসামগ্রী কিনে রাখি।’ বলছিলেন কারওয়ান বাজারের ক্রেতা শাহিনুর বেগম। ‘পুরো মাসের বাজারটা একবারে করে রাখলে টাকার অপচয় থেকে রক্ষা পাওয়া যেতে পারে। সেই সঙ্গে ঝামেলা ও চিন্তামুক্ত থাকা যায়।’ বলেন রন্ধনশিল্পী রাহিমা সুলতানা।
আগেভাগে পরিকল্পনা
রমজান শুরুর আগেই পরিকল্পনা করে নিন মাসকাবারি বাজারের। কী কী দ্রব্য আপনার দরকার, তার হিসাব করে কত টাকা লাগতে পারে তার একটা সম্ভাব্য বাজেট করুন। এতে একবারে একটু বেশি টাকা লাগলেও মাসের শেষে ঠিকই দেখবেন, আপনার বেশ কিছু টাকা বেঁচে যাবে। বাজারের জন্য বাড়তি সময় বা ঝামেলা কমে যাবে।
রমজান মাসে যেহেতু ইফতারের বিষয় আছে, তাই সেভাবে পরিকল্পনা গ্রহণ করুন। রোজার সময় এসব দ্রব্যের মূল্য সাধারণত ওঠানামা করে। কাজেই সময় নিয়ে বসে হিসাব কষে নিন, কোন জিনিস কতটুকু পরিমাণে লাগতে পারে। পাইকারি দোকান থেকে কেনার চেষ্টা করুন। আবার এ সময় অনেক ডিপার্টমেন্টাল স্টোরে বিশেষ ছাড়ে পণ্য বিক্রি চলে। চাইলে সেখানেও যেতে পারেন।
তালিকা করে নিন
রাহিমা সুলতানা জানান, রোজা রাখলে শরীরে পানির ঘাটতি হয়। তাই বাজার করার আগে তালিকায় অবশ্যই শুকনা ফলমূল, ফলের রস, শরবত ইত্যাদি রাখতে হবে। এতে শরীরে পানির ঘাটতি পূরণ হবে। দেখুন পুরো মাসে আপনার কোন কোন জিনিস দরকার পড়বে। সেই সঙ্গে এটি সংরক্ষণ করার ব্যবস্থা থাকা দরকার। সাধারণত এ ধরনের জিনিসের মধ্যে ছোলা, আটা, ময়দা, বেসন, আলু, পেঁয়াজ, তেল, চিনি, গুড়, খেজুর, লবণ, মুড়ি, চিঁড়া, আদা, রসুন ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। এগুলো আপনি সারা মাসই ব্যবহার করতে পারবেন। অপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের তালিকা করে খরচ বাড়াবেন না। তাই একটু বুঝেশুনে তালিকা তৈরি করুন। অনেকে তেলেভাজা খাবার পছন্দ করেন না, আবার অনেকে করেন। তবে এ সময় ভাজা খাবার কম খাওয়া ভালো। এ মাসে কী ধরনের খাবার খাবেন, এর একটি তালিকা পরিবারের সবাই মিলে বসে ঠিক করে নিতে পারেন। প্রতিদিন আপনার কোন দ্রব্য কতটুকু প্রয়োজন, তা হিসাব করে নিন। এটা সাধারণত পরিবারের সদস্যদের চাহিদার ওপর নির্ভর করে। প্রতিদিন যদি আপনার ৩০০ গ্রাম আটা লাগে, তাহলে মাসে আপনার কী পরিমাণ আটা লাগবে, তা সহজেই বের করতে পারবেন।
অনেকে মনে করেন, ডুবো তেলে চপ, বেগুনি, পেঁয়াজু ভাজলে তেল বেশি লাগে এবং তা খেলে সমস্যা হবে। আসলে তা নয়। ডুবো তেলে ভাজলে তেল কম লাগে এবং খাবারে তেল কম পরিমাণে প্রবেশ করে, তবে ভাজার তেল অবশ্যই গরম হতে হবে। লাগাতার ভাজাভুজি না খেয়ে দই-চিঁড়া, ফলমূল, শরবত ইত্যাদি খাবারের মাধ্যমে ইফতারে বৈচিত্র্য আনতে পারেন। রোজার মাসে বাসায় ইফতারের দাওয়াত থাকলে অথবা প্রতিবেশীদের বিলি করার কথা মাথায় রেখে পরিমাণ হিসাব করতে ভুলবেন না। ওই দিন বিশেষ কিছু করতে চাইলে তাও তালিকায় যোগ করে নিন।
কী কিনবেন, কতটুকু
কী কিনবেন, কতটুকু পরিমাণে কিনবেন, ভেবে পাচ্ছেন না? তাহলে দেখে নিতে পারেন রন্ধনশিল্পী রাহিমা সুলতানার দেওয়া পাঁচজনের একটি পরিবারে বাজারের তালিকা।
পণ্য পরিমাণ
আটা ৮-১০ কেজি
ছোলা ৫-৭ কেজি
ডাল ৫ কেজি
বেসন ৫ কেজি
পেঁয়াজ ১৫ কেজি
তেল ৮-১০ লিটার
চিনি ১০ কেজি
খেজুর ৫ কেজি
গুড় ২ কেজি
আলু ১০ কেজি
চিঁড়া ৪-৫ কেজি
মুড়ি ৪ কেজি
রসুন দেড় কেজি
আদা দেড় কেজি-২ কেজি
লবণ ২ কেজি।
এ ছাড়া মরিচ গুঁড়া, হলুদ গুঁড়া, ধনে গুঁড়া, জিরা ইত্যাদি ৫০০ গ্রাম করে কিনতে পারেন।
বাসায় রেফ্রিজারেটর থাকলে বেগুন, পটল, ধনেপাতা, শিম, করলা, ইত্যাদি সবজি রাখতে পারেন ৭-১০ দিনের জন্য।
ইফতারে কী খাবেন
ইফতারে অবশ্যই লেবু বা গুড়ের শরবত, ফলের রস আপনার ভেতরে সতেজতা ফিরিয়ে আনবে। মৌসুমি ফল ৪-৫ প্রকার, খেজুর, দই, চিঁড়া ভেজানো, বিভিন্ন চপ কম পরিমাণে, হালিম, কাঁচা ছোলার সঙ্গে আদা, পেঁয়াজ, মরিচসহ বিভিন্ন প্রকার সালাদ খেতে পারেন।
চাইলে ইফতারে সামান্য কিছু খেয়ে আপনি রাতের খাবার খেতে পারেন।
৬ আগস্ট ঢাকার কারওয়ান বাজার ঘুরে পণ্যের দামদর জানিয়ে দেওয়া হলো।
ছোলা ৪২ টাকা
ডাল (মসুর) ৭৫, ৯০, ৯৫ টাকা
বেসন ৩০-৬৫ টাকা (রকমভেদে)
পেঁয়াজ ২৬ টাকা
তেল ৮৩ টাকা
চিনি ৪৮ টাকা
আলু ১৫ টাকা
মুড়ি ৪৫-৫০ টাকা
খেজুর ৬৫ টাকা থেকে শুরু
গুড় ৫০-৫৫ টাকা
আদা ১০৫ টাকা
রসুন ১৪৫ টাকা
এ দাম কিছুটা কম-বেশি হতে পারে।
লক্ষ রাখুন
 রমজান মাস শুরুর আগেই বাজারটা সেরে ফেলুন।
 প্রয়োজনীয় পণ্য খুচরা না কিনে পাইকারি দোকান থেকে কিনুন।
 ছোলা, ডাল, পেঁয়াজ, বেসন ইত্যাদি পথ্য শুকনো স্থানে সংরক্ষণ করুন।
 মাঝেমধ্যে এগুলো রোদে দিতে পারেন।
 ভাজা খাবার এড়িয়ে চলার চেষ্টা করুন।
 খাবারের তালিকায় অবশ্যই ফলমূল ও সবজি রাখুন।
 তাজা জিনিস দেখে কিনুন।
 ডাল, ছোলা, বেসনে পোকা আছে কি না দেখে নিন।
 অনেক দিন রাখতে পণ্য ভালোভাবে সংরক্ষণ করুন।

নখের অসুখ

নখের অসুখ

নখ ত্বকেরই অংশ, নখ প্রেস্টিন দিয়ে তৈরি। নখ প্রতিদিন তৈরি হয়। প্রতি মাসে ১/৮ ইঞ্চি নখ বড় হয়। পায়ের নখ হাতের নখের তুলনায় ধীরে বড় হয়। নখ সুন্দর রাখার জন্য নখের সঠিক যত্নও প্রয়োজন।
নখের নানারকম অসুখ হতে পারে। নানা অসুখে নখের পরিবর্তন আসতে পারে। শারীরিক নানা রকম অসুখ যেমন ফুসফুস বা হার্টের অসুখ, রক্তস্বল্পতা ইত্যাদি নানা কারণে নখের পরিবর্তন হয়।
নখের সাদা দাগঃ কোনো রকম ফাঙ্গাসের আক্রমণে নখে সাদা দাগ হতে পারে। এ ছাড়া নখের পাশের ত্বকে কোনো আক্রমণের কারণে নখে সাদা দাগ হতে পারে। মাস খানেকের মাঝে সাদা দাগ আপনা আপনি চলে না গেলে ত্বক বিশেষজ্ঞের শরণাপন্ন হওয়া প্রয়োজন।
নখের ভেফু যাওয়াঃ শারীরিক অসুখ এবং অনেক বাহ্যিক কারণে নখ ভেঙে যেতে পারে। খুব বেশি সাবান ব্যবহার, নেল পলিশ ব্যবহার ইত্যাদি কারণে নখ ভাঙতে পারে।
ভেঙে যাওয়া নখের যত্নঃ
অতিরিক্ত সাবান, নেলপলিশ, ব্যবহার করবেন না।
সাবান ব্যবহারের করে কোল্ড ক্রিম ব্যবহার করবেন।
ল্যাকটিক এসিড ও ইউরিয়াযুক্ত ক্রিম প্রতি রাতে ব্যবহার করবেন।
১৫ দিন অন্তর হালকা গরম অলিভ তেলে ১৫ মিনিট আঙুল ডুবিয়ে রাখুন। এ ছাড়া প্রতি রাতে হাতের নখে ও আঙুলে অলিভ তেল মালিশ করম্নন।
নেল পলিশ এবং রিমুভার ব্যবহারের পরে আঙুল ও নখে অলিভ তেল লাগাবেন।
প্রচুর প্রোটিনযুক্ত খাবার খাবেন, প্রতিদিন দুধ বা দই খাবেন।
ক্যালসিয়াম যুক্ত খাবার খাবেন।
পায়ের নখ ভেতরের দিকে ঢুকে যাওয়াঃ এটা খুব সাধারণ সমস্যা। নখ বড় হওয়ার সময় ভেতরের দিকে ঢুকে গেলে এমন হয়। এতে করে ওই জায়গা ফুলে যায়। লাল হয়ে মরেও প্রচণ্ড ব্যথা হয়। ইনফেকশনের কারণে এমন হয়। প্রতিকার ও প্রতিরোধঃ নখ কাটার সময় লক্ষ্য করে দু্‌ই পাশের নখ কাটবেন।
যথাযথ জুতা পরবেন।
অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল ক্রিম বা অয়েন্টমেন্ট নখের কোণে লাগাবেন।
নখের কোণ যদি ব্যথা করে বা ফুলে যায় তবে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হবেন।
————————
ডা. ওয়ানাইজা

সুন্দর ত্বক ও চুলের জন্য অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট

সুন্দর ত্বক ও চুলের জন্য অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট


ত্বক আমাদের শরীরের সবচেয়ে বড় অঙ্গ। বাইরের ধুলো, রোদ-সবকিছুই এসে পড়ে ত্বক ও চুলের ওপর। এতে ত্বক ও চুলের ফ্রি রেডিক্যালের সক্রিয়তা বেড়ে যায়। এর কারণে ত্বকের উজ্জ্বলতা নষ্ট হয়, চুল পড়ে যায়, সাদা হয়ে যায় এবং ত্বকে বলিরেখা পড়ে কিংবা বার্ধক্যের ছাপ পড়ে।
ত্বক ও চুলের সমস্যার সমাধানে বড় ভূমিকা রাখে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট। ভিটামিন ‘এ’ বা বিটা ক্যারোটিন, ভিটামিন-ই, ভিটামিন-সি এবং ম্যাগনেশিয়াম, জিংক, কপার, সেলেনিয়াম ত্বক ও চুলের সুস্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী।
চুলের জন্য ভিটামিন-ই ও জিংক খুব ভালো কাজ করে। ভিটামিন-ই যুক্ত তেল মাথায় মাখলেও ফ্রি রেডিক্যালের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে রেহাই পাওয়া সম্ভব। আমাদের ত্বক বাইরে বের হলেই আলট্রাভায়োলেট রশ্মির সংস্পর্শে আসে। আর এতে ত্বকে প্রচুর পরিমাণে ফ্রি রেডিক্যাল তৈরি হয়। দীর্ঘদিন এমনটি হলে অনেক সমস্যা হতে পারে। এতে ত্বক কালচে হয়ে যায়, বলিরেখা পড়ে।
অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি থেকে ত্বককে রক্ষা করে। আলট্রাভায়োলেট রশ্মি ত্বকের ক্যারোটিনের মাত্রা কমিয়ে দেয়। তাই নিয়মিত বিটা ক্যারোটিন খেলে ত্বকের সূর্যের রশ্মি সহ্য করার ক্ষমতা বেড়ে যাবে। বিটা ক্যারোটিন ত্বকের ল্যাঙ্গারহ্যান্স কোষকে সক্রিয় করে আর এই কোষ ত্বককে আলট্রাভায়োলেট রে থেকে বাঁচায়। ভিটামিন-সি ও ভিটামিন-ই ফ্রি রেডিক্যাল ধ্বংস করে দেয়। ভিটামিন-সি আলট্রাভায়োলেট-এ রশ্মিকে প্রতিহত করে আর ভিটামিন-ই আলট্রাভায়োলেট-বি রশ্মিকে প্রতিহত করে।
ত্বক ও চুলের সুস্বাস্থ্যের জন্য অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট খাবেন, নাকি সরাসরি মাখবেন, তা নিয়ে বর্তমানে নানা বিতর্ক চলছে। তবে প্রতিদিন অ্যান্টি-অক্সিডেন্টসমৃদ্ধ খাবার কিংবা বড়ি খাওয়া অবশ্যই কার্যকর।
আবার বাইরে থেকে মেখে বা লাগিয়েও অ্যান্টি-অক্সিডেন্টের উপকার পাওয়া সম্ভব। এর সত্যতা কিছু গবেষণায় পাওয়া গেছে। ভিটামিন-ই ও ভিটামিন-সি ত্বকে লাগালে ত্বক উজ্জ্বল হয়, বলিরেখার গভীরতা কমে-এমন দাবি করেছেন গবেষকেরা।

খুশকির কারণ ও চিকিৎসা

খুশকির কারণ ও চিকিৎসা


খুশকি খুবই সাধারণ সমস্যা। প্রায় প্রত্যেক মানুষের মাথায় জীবনে কোনো না কোনো সময় খুশকি হয়েছে। মাথার ত্বক বা স্কাল্পে সব সময় কিছু নতুন কোষ হয় আর কিছু পুরনো কোষ ঝরে যায়। এটা একটা চক্র। কিন্তু যখন পুরনো মরা কোষ জমে যায় এবং ফাঙ্গাস সংক্রমিত হয় তখন খুশকি হয়। মাথা থেকে সাদা আঁশের মতো গুঁড়া পড়তে থাকে এবং সে সাথে চুলকানি হয়।
খুশকির কারণ
তেলের ব্যবহার : প্রচুর তেলের ব্যবহার খুশকি হওয়ার একটি কারণ। মাথার ত্বক তেলের কারণে চিটটিটে হয়ে খুশকি হয়। আবার তেল ব্যবহার করলে খুশকি হয়েছে সেটা বোঝা যায় না।
যথাযথ শ্যাম্পু ব্যবহার না করা : যথাযথ শ্যাম্পু ব্যবহার না করার কারণেও খুশকি হতে পারে। মাথার ত্বক বা স্কাল্প তৈলাক্ত হলেও খুশকি হওয়ার প্রবণতা থাকে। কিশোর বা তরুণ বয়সে ব্রণের সাথে খুশকিও খুব স্বাভাবিক সমস্যা।
স্কাল্প অত্যাধিক শুষ্ক হলেও খুশকি হতে পারে। কিন্তু ত্বক সমস্যা যেমন সেবোরিক ডার্মাটাইটিস, সোরিয়াসিস, একজিমা, ফাঙ্গাল ইনফেকশন এবং অন্যান্য ব্যাক্টেরিয়াল ইনফেকশন বা সংক্রমণ খুশকির মতো মনে হতে পারে। মানসিক দুশ্চিন্তার কারণেও মাথায় খুশকি হয়।
খুশকি সমস্যার সমাধান
প্রথমেই মাথায় তেল ব্যবহার করা বন্ধ করুন। তারপর শ্যাম্পু বদলে ফেলুন। খুশকিনাশক শ্যাম্পু ব্যবহার করতে হবে। জেড পিটি অর্থাৎ জিঙ্ক পাইরিথিওনযুক্ত শ্যাম্পু ব্যবহার করবেন। পরের সপ্তাহে একদিন করে পরের এক মাসে ব্যবহার করবেন। এতে কোনো উপকার না হলে এক বা দুই শতাংশ কিটোনোনাজলযুক্ত শ্যাম্পু ও উপরিউক্ত নিয়মে ব্যবহার করতে হবে। আর স্কাল্প যদি শুষ্ক প্রকৃতির হয় তবে শ্যাম্পু করার আগের রাতে অলিভ তেল মাথায় লাগাতে পারেন অথবা শ্যাম্পু করার ২ ঘন্টা আগেও অলিভ তেল লাগাতে পারেন। এরপরও সমস্যা থাকলেও অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন। রোগের কারণে খুশকি হলে তার যথাযথ চিকিৎসা প্রয়োজন।
ডা. ওয়ানাইজা

চুল ঝরবে না আর!

চুল ঝরবে না আর!


পুরুষের মাথা থেকেই সাধারণত চুল ঝরে বেশি। তাই টাক সমস্যার তাক লাগানো সব বিজ্ঞাপনের ভিড়ে পুরুষকে যেমন নাকাল হতে হয়, তেমনি মানসিকভাবেও ভেঙে পড়েন তাঁরা। চুল পড়া রোধে প্রথম ব্যবস্থা হিসেবে শরীরে জোগান দিতে হবে প্রয়োজনীয় ভিটামিনগুলো। জন্মগত কিছু ত্রুটি ছাড়া অধিকাংশ ক্ষেত্রেই পুরুষের চুল পড়ে যায় ভিটামিনের অভাবে। কী সেই ভিটামিন আর কেমন করেই বা ভিটামিনগুলো আমাদের চুল পড়া রোধে ভূমিকা রাখে? জেনে নেওয়া যাক এবার। চুলের স্বাভাবিক বৃদ্ধির জন্য সেবাম গ্রন্থি খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। আর এই গ্রন্থির সুস্থতার জন্য ভিটামিন এ খুব দরকারি। ভিটামিন বি কমপ্লেক্স হলো আটটি ভিটামিনের সমষ্টি। শরীরে লোহিত রক্তকণিকা তৈরিতে ভিটামিন বি কমপ্লেক্স একদিকে যেমন মুখ্য ভূমিকা রাখে, অন্যদিকে চুলের গোড়ায় প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান পৌঁছে দেয়। এভাবেই চুল তার প্রয়োজনীয় পুষ্টি পেয়ে বাড়বাড়ন্ত হয়। ভিটামিন সিতে থাকে শক্তিশালী অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট। এই অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট চুলকে সুস্থ যেমন রাখে, তেমনি বৃদ্ধি করে চুলের সৌন্দর্য। ভিটামিন ইর আছে লোহিত রক্তকণিকায় উল্লেখযোগ্য ভূমিকা। তার চেয়েও বড় কথা, ভিটামিন ই মাথার সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম সব রক্তনালিকায় রক্তের প্রবাহ ঠিক রাখে আর পৌঁছে দেয় অক্সিজেন। তাই চুল পড়ার প্রবণতাও কমে যায় অনেকখানি। এ ছাড়া সুস্থ চুল আর তার স্বাভাবিক বৃদ্ধির জন্য আরও প্রয়োজন জিংক, প্রোটিন, আয়রন, কপার ও ম্যাগনেসিয়াম।
সিদ্ধার্থ মজুমদার

চুল পড়া কমাতে

চুল পড়া কমাতে


chulpora
চুল পড়া নিয়ে দুশ্চিন্তার কিছু নেই। চুল পড়ছে। কী যে করি! এমন কথা প্রায়ই শোনা যায়। আর গরমে চুল পড়ার হার তুলনামূলকভাবে একটু বাড়ে। তাই বলে তো বসে থাকলে চলবে না। চুল পড়া কমানোর সমাধান দিয়েছেন কিউবেলার রূপবিশেষজ্ঞ ফারজানা আরমান। তিনি জানান, গ্রীষ্মকালে মাথার ত্বকের ধরন পরিবর্তন হয়। ত্বকের গ্রন্থি থেকে অতিরিক্ত তেল নিঃসরণ হয়। ফলে চুল তৈলাক্ত হয়ে পড়ে। আবহাওয়ার এই পরিবর্তনের কারণে চুল পড়ে অনেক সময়। এ ছাড়া চুলের গোড়ার ঘাম না শুকালে, অতিরিক্ত তেলযুক্ত খাবার খেলে, চুলের ধরনের সঙ্গে মানানসই নয় এমন শ্যাম্পু ও কন্ডিশনার ব্যবহার করলে সাধারণত চুল পড়ে।
আর এসব থেকে মুক্তি পেতে কী করবেন? ফারজানা আরমান মনে করেন, সঠিক খাদ্যাভ্যাস থাকলে আমাদের চুল পড়ার হার অনেকটা কমে আসবে। তবে প্রতিদিন ১০০টি চুল পড়লে চিন্তিত হওয়ার কোনো কারণ নেই। পুষ্টিযুক্ত পরিমিত খাবার খেলে তা চুলেও পুষ্টি জোগায়। খাদ্য তালিকায় অবশ্যই ফল, সবজি থাকতে হবে। এসব খাবার খেলে চুলের গোড়া শক্ত হয়। ফলে চুল পড়া কমে যায়। এ ছাড়া চুলের গোড়ায় তেল ও ময়লা জমার কারণেও চুল পড়ে। সে জন্য খুব ভালো হয় ঘন শ্যাম্পু ব্যবহার না করে একটু পাতলা ধরনের শ্যাম্পু ব্যবহার করলে। ঘন শ্যাম্পু হলে তার সঙ্গে সামান্য পরিমাণে পানি মিশিয়ে নিতে পারেন। শ্যাম্পু দিয়ে মোটা চিরুনি বা ব্রাশ দিয়ে চুলের আগাগোড়া আঁচড়িয়ে ফেলুন। এরপর পানি দিয়ে ভালোভাবে ধুয়ে ফেলুন, যাতে চুলে কোনো শ্যাম্পু না থাকে। এভাবে প্রতিদিন চুলে শ্যাম্পু করা যেতে পারে। এবার ব্যবহার করুন কন্ডিশনার। কন্ডিশনার কখনোই চুলের গোড়ায় লাগাবেন না। সারা মাথার চুলে কন্ডিশনার লাগিয়ে দু-তিন মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন।
চুল পড়া কমাতে যা ব্যবহার করবেন
লিভ ইন কন্ডিশনার: সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি থেকে চুলকে রক্ষা করে লিভ ইন কন্ডিশনার। রং করা চুল কিংবা কোঁকড়া চুলের জন্য এ কন্ডিশনারটি ব্যবহার করা ভালো।
প্রাকৃতিক কন্ডিশনার: শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধোয়ার পর পানিতে লেবুর রস মিশিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন। দেখবেন চুল ঝরঝরে হয়ে গেছে। এ ছাড়া সাদা সিরকাও এভাবে প্রাকৃতিক কন্ডিশনার হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন।
হট অয়েল ট্রিটমেন্ট: তৈলাক্ত চুলসহ যেকোনো চুলের জন্য এটি উপকারী। তেল হালকা গরম করে তুলা বা হাত দিয়ে হালকা করে মাথার ত্বকে ঘষে লাগান। আধা ঘণ্টা পর শ্যাম্পু করে ফেলুন।
টু-ইন শ্যাম্পু: যেসব শ্যাম্পুর গায়ে টু-ইন লেখা থাকে তা এ দেশের আবহাওয়ার জন্য খুব একটা উপযোগী নয়। একনাগাড়ে এ ধরনের শ্যাম্পু ব্যবহার করা উচিত নয়।
চুলের প্যাক
 হেনা, সামান্য পরিমাণে টকদই ও ডিমের মিশ্রণ।
 ডিম, মাখন, সামান্য পরিমাণে পানি ও জাম্বুরার রস মিশিয়ে ১৫-২০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন।
 জলপাই তেল, ১০ ফোঁটা ল্যাভেন্ডার তেল মিশিয়ে হালকা গরম করে এর মধ্যে দুটি ভিটামিন ‘ই’ ক্যাপসুল মিশিয়ে তা চুলে দিন। সম্ভব হলে চুলে গরম পানির ভাপ দিতে পারেন। এ জন্য তোয়ালে গরম পানিতে ডুবিয়ে নিন। এরপর এর পানি ঝরিয়ে মাথায় জড়িয়ে রাখুন। ১০ মিনিট পর চুল ধুয়ে ফেলুন।
 পাকা কলা, এক চামচ টকদই ও এক চামচ জলপাই তেল মিশিয়ে চুলে লাগাতে পারেন।
স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজের চর্মরোগ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক রাশেদ মোহাম্মদ খান বলেন, মানসিক চাপ, বড় অসুখের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া, মাথার ত্বকে চর্মরোগ, বংশগতির কারণেও চুল পড়ে। তবে চুল পড়া কমাতে প্রধানত চুলে পুষ্টি জোগাতে হবে। সে জন্য তেল-মসলাযুক্ত খাবার, চর্বিযুক্ত খাবার পরিহার করতে হবে এবং মানসিক চাপ কমাতে হবে। এ ছাড়া সময়মতো খাওয়া-ঘুমানো ও পানি পরিমাণমতো পান করতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে, শ্যাম্পু করার সময় যেন নখের আঁচড় মাথার ত্বকে না লাগে।
আরেকটি বিষয় হলো, চুল পড়ার সঙ্গে সঙ্গে তা গজিয়ে যায়। সে কারণে এটি নিয়ে খুব বেশি দুশ্চিন্তার কিছু নেই। খুশকি দূর না হলেও চুল পড়ে। খুশকি থাকলে সপ্তাহে দুই দিন খুশকি প্রতিরোধী শ্যাম্পু ব্যবহার করুন। অন্যান্য দিন প্রোটিন, অ্যামাইনো প্রোটিন সমৃদ্ধ শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন। এর ফলে চুলের গোড়া শক্ত হয়। নিয়মিত জলপাই তেল ব্যবহার করা যেতে পারে। তবে জেল ও চুলের স্প্রে কম ব্যবহার করাই ভালো। এতে চুলের ক্ষতি কম হয়। আসল কথা হলো, চুলকে পরিষ্কার রাখতে হবে। তবেই দেখবেন চুল পড়া কমে গেছে।
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, জুন ০৮, ২০১০

কেমন বয়সের মেয়ে বিয়ে করা উচিৎ

কেমন বয়সের মেয়ে বিয়ে করা উচিৎ

 পুরুষের সমস্যা-১ইতিপূর্বে একাধিকবার পুরুষের পাত্রী নির্বাচন এবং শারীরিক সমস্যা নিয়ে লিখেছি। এখনও আমাদের সমাজে অনেক ক্ষেত্রে ধারণা করা হয়ে থাকে পুরুষের আবার বিয়ের বয়স কিসের। পুরুষ মাত্রেই যে কোন বয়সের একটি মেয়েকে ঘরে তুলতে পারে কিন্তু বিষয়টির সামাজিক প্রেক্ষাপটের চেয়ে শারীরিক বিশ্লেষণ বেশী গুরুত্ব দেয়া উচিত। এই মুহূর্তে বিয়ের ক্ষেত্রে পাত্র-পাত্রীর বয়স নিয়ে লেখার কোন ইচ্ছেই ছিলো না। পুরুষের অন্য একটি বিষয় লিখবো ভেবেছিলাম। কারণ আমার এক পুরুষ রোগীর দীর্ঘদিন পর পিতা হবার চিকিৎসার পেক্ষাপট নিয়ে লিখতে চেয়েছিলাম। এ বিষয়টি পরে লেখা যাবে। যাহোক যা বলছিলাম, দু’তিন, দিন আগে আমার চেম্বারে একটা মেয়ে আসে। উজ্জ্বল শ্যামলা। শরীরের গড়ন হালকা। মেয়ে বললে ভুল হবে, কিশোরী বলাই ভালো। নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে বাড়ী। সোনারগাঁও বললে, আমি নানা কারণে কিছুটা দুর্বল হয়ে পড়ি। তার একটি কারণ হচ্ছে আমার লেখনীর শিক্ষাগুরু প্রখ্যাত সাংবাদিক লেখক ও কলামিষ্ট জনাব শফিকুল কবির এর বাড়ী এই সোনারগাঁওয়ে। যাই হোক, সোনারগাওয়ের সেই মেয়েটি বললেন, আমি ফর্সা হতে চাই ডাক্তার সাহেব। আমি বললাম তুমিতো অনেক সুন্দর এবং তোমার গায়ের রং যথেষ্ট ভালো। মিয়েটিকে আশ্বস্ত করতে বললাম, আমার মেয়ের গায়ের রং ও তোমার মত। তাছাড়া ত্বক ফর্সা করার কোন চিকিৎসা নেই। আজকাল কিছু কিছু বিউটি পার্লারের অপপ্রচারে বিভ্রান্ত হয়ে তরুণী-মহিলারা ছুটছেন তক ফর্সা করতে। আসলে ত্বক ফর্সা করার কোন ব্যবস্থা চিকিৎসা শাস্ত্রে নেই। বহুবার বলেছি আমি আমেরিকা ও সিঙ্গাপুরের দু’টি বিখ্যাত হাসপাতালে স্কিন, লেজার ও কসমেটিক সার্জারির ওপর উচ্চতর প্রশিক্ষণ নেয়ার সময় কখনও ত্বক ফর্সা করা সম্ভব এমন কথা শুনিনি। কখনও কেউ বললেনি ত্বক ফর্সা করা যায়। তবে আজকাল লেজার টেকনোলজির সুবাধে ত্বক ব্রাইট করা যায়, ফর্সা করা যায় না। মুখের ব্রাউন স্পট, পিগমেন্ট, তিল, মোল, আঁচিল, অবাঞ্ছিত লোম দূর করা যায়। ত্বক ফর্সা করার কোন লেজার ও চিকিৎসা এখনও বের হয়নি। তবে তথাকথিত হুয়াইটিনিয সিস্টেমের নামে মুখের ত্বক পুড়িয়েং দিয়ে ফর্সা করার মারাত্মক ক্ষতিকর উপায় নিয়ে দু’একটি বিউটি পার্লার প্রচার করে থাকে। এসব অবৈজ্ঞানিক মারাত্মক ক্ষতিকর হুয়াইটিং সিস্টেম নিয়ে আর একদিন বিস্তারিত লিখবো।
সোনারগাঁও এর ঐ মেয়েটির কাছে জানতে চাইলাম- তুমি কেন ত্বক ফর্সা করতে চাইছো। প্রথমে মেয়েটি সংকোচ বোধ করলেও সে জানালো আমার বিয়ে হয়েছে একমাস। স্বামী আমেরিকা প্রবাসী। বর্তমানে দেশে আছে। স্বামী চায় আরও ফর্সা ত্বক। এরপর জানতে চাই তোমার স্বামী কোথায়। মেয়েটি বললো ও আমার সঙ্গেই এসেছে। ধারণা ছিলো অষ্টম শ্রেণীর ছাত্রী ১৪/১৫ বছরের মেয়েটির স্বামীর বয়স ২০/২২-এর বেশী হবে না। ওমা বয়সে ৩৮/৪০ এর কম হবে না। প্রথম মিনিট খানেক ভীষণ রাগ হয়েছিলো। যাহোক, রোগীদের ওপর রাগ করার কোন অধিকার ডাক্তারের নেই। স্বাভাবিক হয়ে জানাতে চাইলাম আপনার নতুন বিবাহিত জীবন কেমন কাটছে। এরপর বেশখানিকটা সময় নিয়ে কথা হলো। ত্বক ফর্সা করার ভুল ধারণা ভেঙ্গে দিয়ে কিশোরী মেয়েটিকে বাইরে যেতে বললাম। এর পর মধ্যবয়স্ক যুবকের কাছে জানতে চাই কেন আপনার অর্ধেকের চেয়ে কম বয়সের একটি মেয়েকে বিয়ে করেছেন। যুবকটি কোন সদুত্তোর দিতে পারলেন না। এই যুবকটি ঢাকার একটি নামকরা কলেজ এবং একটি নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলেন। এরপর যুক্তরাষ্ট্রে চলে যান। যুবকটি জানালেন এখনই তাদের ব্যক্তিগত জীবনে সমস্যা হচ্ছে। বললেন ডাক্তার সাহেব শরীর ঠিক রাখতে কোন ওষুধ দেয়া যাবে কিনা। আমি দু’একটি মামুলি প্যাথলজিক্যাল পরীক্ষা করতে দিয়ে আর একদিন আসতে বলি।
সুপ্রিয় পাঠক, আজ থেকে ১০ বছর পরের একটি দৃশ্যের কথা চিন্তা করুন। যখন সোনারগাওয়ের কিশোরী মেয়েটির বয়স হবে ২৫। পরিপূর্ণ এক যুবতী। আর যুবকটির বয়স হবে ৪৮/৫০। এ বয়সে নিশ্চয়ই দু’জনের চাওয়া-পাওয়ার ক্ষেত্রে থাকবে অনেক ব্যবধান। এখানে আজকের কিশোরীটির চিরায়ত বাঙালী চরিত্রের রূপায়ণ অর্থাৎ সব কিছু নিরবে মেনে নিয়ে বয়স্ক স্বামীর ঘর করা অথবা পরিবারের সকলের অমতে ভিন্ন চিন্তা করাই কিন্তু আমাদের মত রক্ষণশীল সমাজে সব সময় ছাড়া উপায় নেই। কাজটি করতে পারে না অথবা করে না। যাহোক, আমাদের দেশে এখনও আইন বলবৎ আছে মেয়েদের ১৮ বছরের নীচে এবং পুরুষের ২১ বছরের কম বয়স বিয়ে করা উচিত নয়। বয়সের পার্থক্য কেমন হবে তা অবশ্য আইনে বলা নেই। তবুও একজন নগন্য সেক্সোলজিষ্ট হিসেবে আমার নিজস্ব অ্যাসেসমেন্ট হচ্ছে বিয়ের ক্ষেত্রে নারী-পুরুষের বয়সের ব্যবধান বেশী থাকা বাঞ্ছনীয় নয়। এছাড়া কোন অবস্থাতেই মেয়েদের ১৮ বছরের নীচে বিয়ে দেয়া উচিত নয়। সম্ভব হলে মেয়েদের নূন্যতম বিয়ের বয়স ২০ বছর নির্ধারন করা উচিৎ। বিয়ের ক্ষেত্রে ছেলে-মেয়েদের একই বয়সী না হলে বয়সের ব্যবধান সর্বোচ্চ ৫/৭ বছরের মধ্যে থাকা ভালো। তবে যে কোন মেয়ে তার পরিপূর্ণ বয়সে যে কোন বয়সের পুরুষদের বিয়ে করার আইনগত অধিকার রাখেন। এটা নিশ্চয়ই তার নিজস্ব ব্যাপার। তবে অপরিণত মেয়েদের ক্ষেত্রে স্বামীর বয়স নির্ধারণ করার দায়িত্ব অবশ্যই অভিভাবক বা পিতা-মাতার। শারীরিক ও মানসিক সমস্যা এড়াতে অবশ্যই স্বামী-স্ত্রীর বয়সের ব্যবধান কম হওয়া উচিত। পাশাপাশি যদি কেউ বেশী বয়সে বিয়ে করতে চান তাদের অবশ্যই সতর্কতা অবলম্বন করা উচিৎ। এতে ভবিষ্যতে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে সৃষ্ট নানা সমস্যা এড়ানো যায়।
—————————–
ডাঃ মোড়ল নজরুল ইসলাম
চুলপড়া, যৌন সমস্যা, পুরুষ বন্ধ্যাত্ব চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ
এবং লেজার এন্ড কসমেটিক্স সার্জন
বাংলাদেশ লেজার স্কিন সেন্টার

কোমরে ব্যথায় ১০ পরামর্শ

কোমরে ব্যথায় ১০ পরামর্শ 

কোমরে ব্যথা নিরাময়ে যেমন ব্যায়াম জরুরি, তেমনি সতর্কতাও কাজে আসে।

১. নিচ থেকে বা মাটি থেকে কিছু তুলতে হলে না ঝুঁকে হাঁটু ভাঁজ করে বসুন ও তারপর তুলুন।
২. ঘাড়ে ভারী কিছু ওঠাবেন না। ভারী জিনিস শরীরের কাছাকছি রাখুন। পিঠে ভারী কিছু বহন করতে হলে সামনে ঝুঁকে বহন করুন।
৩. ৩০ মিনিটের বেশি একনাগাড়ে দাঁড়িয়ে বা বসে থাকবেন না। হাঁটু না ভেঙে সামনের দিকে ঝুঁকবেন না। দীর্ঘ সময় হাঁটতে হলে উঁচু হিল পরবেন না। অনেকক্ষণ একনাগাড়ে দাঁড়িয়ে থাকতে হলে কিছুক্ষণ পর পর শরীরের ভর এক পা থেকে অন্য পায়ে নিন। একটু বসে বিশ্রাম নিন।
৪. গাড়ি চালানোর সময় স্টিয়ারিং হুইল থেকে দূরে সরে না বসে সোজা হয়ে বসুন।
৫. চেয়ার টেবিল থেকে বেশি দূরে থাকবে না। সামনে ঝুঁকে কাজ করবেন না। কোমরের পেছনে সাপোর্ট দিন। এমনভাবে বসুন, যেন হাঁটু ও ঊরু মাটির সমান্তরালে থাকে। নরম গদি বা সিপ্রংযুক্ত চেয়ার পরিহার করুন। ছোট ফুট রেস্ট ব্যবহার করুন।
৬. উপুড় হয়ে শোবেন না। ফোম বা সিপ্রংয়ের গদিযুক্ত বিছানা পরিহার করুন। বিছানা শক্ত ও চওড়া হলে এবং তোশক পাতলা ও সমান হলে ভালো।
৭. ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুন। স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস গড়ে তুলুন।
৮. নিয়মিত কায়িক শ্রম করুন বা ব্যায়াম করুন। নিয়মিত হাঁটুন।
৯. কাটা-কোটা, রান্না, মসলা পেষা, ঘর মোছা, কাপড়কাচা, ঝাঁট দেওয়া বা নলকূপ চাপার সময় মেরুদণ্ড সাধারণ অবস্থায় এবং কোমর সোজা রাখুন।
১০. যাঁরা কোমরের ব্যথায় ভুগছেন, তাঁরা বিছানা থেকে ওঠার সময় সতর্ক হোন। চিত হয়ে শুয়ে প্রথমে হাঁটু ভাঁজ করুন। এবার ধীরে ধীরে এক পাশে কাত হোন। পা দুটি বিছানা থেকে ঝুলিয়ে দিন, কাত হওয়া দিকে কনুই ও অপর হাতের তালুর ওপর ভর দিয়ে ধীরে ধীরে উঠে বসুন।
অধ্যাপক মো. জিল্লুর রহমান
নিউরো সার্জারি বিভাগ, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল।

Tuesday, 28 May 2013

বুক জ্বলা, পেটে চিনচিনে ব্যথা ?


বুক জ্বলা, পেটে চিনচিনে ব্যথা?

 
bukjola
বুক জ্বলা, পেটের মাঝখানে চিনচিনে ব্যথা, পেট ফাঁপা ও ভার বোধ হওয়া, বুক-পেটে চাপ অনুভূত হওয়া—এসব হয়নি এমন মানুষ পাওয়া ভার। প্রচলিত কথায় একে বলে পেটে গ্যাস হয়েছে। পাকস্থলী থেকে খাদ্য হজম করার জন্য নির্গত হয় শক্তিশালী হাইড্রোক্লেরিক অ্যাসিড। যা পাকস্থলীকেই যেন হজম করে না ফেলে, সে জন্য এটির দেয়ালে থাকে প্রতিরোধী আবরণ। কোনো কারণে এই প্রতিরোধশক্তিতে ফাটল দেখা দিলে বা অতিরিক্ত অ্যাসিড নিঃসৃত হতে থাকলে পুরো ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যায়। একে বলে গ্যাস্ট্রিক আলসার।
কিছু সাধারণ নিয়মকানুন পালন করলে এই গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা অনেকটাই কমানো যায়।
১. নির্দিষ্ট সময়ে খাদ্য গ্রহণ করুন। পাকস্থলী নির্ধারিত সময়ে অ্যাসিড তৈরি হয়। এ সময় পেটে খাবার না পেলে সে নিজের দেয়ালেরই ক্ষতি করতে শুরু করে।
২. একবারে অতিরিক্ত পরিমাণ খাবার না খেয়ে সারা দিনের খাবারটাকে বেশ কয়েক ভাগে ভাগ করে নিন। অনেকক্ষণ একটানা না খেয়ে থাকবেন না। মূল খাদ্য যেমন প্রাতরাশ, মধ্যাহ্নভোজ বা নৈশভোজ কখনো একবারে বাদ দেবেন না। অনেকেই প্রাতরাশ না খেয়েই বাইরে চলে যান, অনেকে আবার খাদ্যনিয়ন্ত্রণের নামে নৈশভোজ না করেই শুয়ে পড়েন, এগুলো মোটেই ভালো অভ্যাস নয়।
৩. ঘুমানোর কমপক্ষে দুই ঘণ্টা আগে রাতের খাবার সেরে নিন। খাবার পর বসে পত্রিকা বা বই পড়ুন, অথবা টেলিভিশন দেখুন।
৪. ঘুমানোর সময় লক্ষ্য রাখুন, মাথা শরীরের চেয়ে ৬ থেকে ৮ ইঞ্চি ওপরে আছে কি না। অনেক সময় শোবার সমস্যার কারণে পাকস্থলীর খাবারসহ অ্যাসিড ওপরের দিকে ঠেলে আসে।
৫. ওজন কমান। মেদভুঁড়ি নিয়ন্ত্রণ করুন।
৬. ধূমপান, তামাক ও মদ্যপান এড়িয়ে চলুন।
৭. অতিরিক্ত চা-কফি, চকলেট, তৈলাক্ত ও ভাজা পোড়া খাবার, বেশি মসলা ও তেল দিয়ে প্রস্তুত খাদ্য যথাসম্ভব এড়িয়ে চলাই ভালো।
৮. মানসিক চাপ ও দুশ্চিন্তাও অনেক সময় এই সমস্যা বাড়িয়ে দেয়। তাই মানসিক চাপ সামলানোর চেষ্টা করুন।
ডা. আ ফ ম হেলালউদ্দিন

ত্বকের চুলকানি কি করবেন


ত্বকের চুলকানি কি করবেন

 
ত্বক শরীরের সবচেয়ে বড় অঙ্গ এবং ইহার অনেক প্রকার গুরুত্বপূর্ণ কাজ রহিয়াছে। সাধারণত ত্বকের সুস্পষ্ট অনেক রোগের লক্ষণ হিসাবে চুলকানি হয়ে থাকে তবে ত্বকের রোগ ছাড়াও চুলকানি হতে দেখা যায়। দীর্ঘস্থায়ী বা তীব্র চুলকানি যথেষ্ট কষ্টদায়ক। ইহাতে কার্যক্ষমতা বাধাগ্রস্থ হয় এবং ত্বকও স্থায়ীভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়।
ত্বকের অসুখের মধ্যে খোস পাঁচড়া, এটপিক, একজিমা, কনটাক্ট ডারমাটাইটিস, ডারমাটাইটিস হারপেটিফরমিস রোগে তীব্র চুলকানি হলেও সোরিয়াছিছ ওষুধের পার্শ প্রতিক্রিয়া, বুলাস চবসঢ়যরমড়রফ ও দাদ জাতীয় রোগে মৃদু চুলকানি হয়ে থাকে। চুলকানিতে এক ধরনের ওসসঁহড়ষড়মরপধষ প্রতিক্রিয়া বিদ্যামান।
ত্বকের সুষ্পষ্ট রোগ ছাড়াও যকৃতের রোগ, বৃক্ক বা কিডনির রোগ, রক্তেররোগ, থাইরয়েড গ্লান্ডের রোগ, এইচ.আই.ভি. ইনফেকশন, ক্যান্সার, গর্ভাবস্থায় চুলকানি, কিছু কিছু মানসিক রোগসহ আরো অনেক অসুখে চুলকানি হতে দেখা যায়। ত্বকের সুস্পষ্ট অসুখের অনুপস্থিতিতে চুলকানি হলে অনুসন্ধান করে ধৈর্য্য ধারন করে মূল অসুখটিরও চিকিৎসা করতে হবে। সাধারণ চুলকানিতে বাহ্যিক প্রয়োগের নন-ষ্টারয়েড লোশন ব্যবহার করা নিরাপদ। অপেক্ষাকৃত জটিল চুলকানিতে আক্রান- স্থানের অবস্থান, আয়তন এবং রোগের তীব্রতা অনুযায়ী সঠিক ক্ষমতা সম্পন্ন ষ্টারয়েড জাতীয় ওষুধ বাহ্যিক ব্যবহার করা যেতে পারে। অধিকতর জটিল চুলকানি এবং জবংরংঃধহঃ ঠধৎরবঃু ড়ভ টৎঃরপধৎরধ-এর ক্ষেত্রে এন্টিহিষ্টামিন (অহঃরযরংঃধসরহব) ও বিশেষ ক্ষেত্রে ইম্যুনোসার্প্রেসিভ ওসসঁহড় ঝঁঢ়ঢ়ৎবংংরাব জাতীয় ওষুধ মুখে সেবনের প্রয়োজন হয়। কোন কোন মুখে সেবনের ওষুধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া রয়েছে বিধায় রোগীর পেশা অনুযায়ী সাবধানে ওষুধ নির্বাচন করতে হয়।
ডা: এম এ রহমান
সিনিয়র কনসালটেন্ট
সরকারী কর্মচারী হাসপাতাল, ঢাকা।
চেম্বার: ক্যাশ এন্ড ক্যারি ফার্মা, আরামবাগ, মতিঝিল, ঢাকা।

বিয়ের আগে দাঁতের যত্ন


বিয়ের আগে দাঁতের যত্ন

 
teeth
বিয়ে মানুষের জীবনে একটি নতুন ধাপ। বিয়ে মানে দুটি মনের ব্যবধানকে শূন্যে নিয়ে এসে সামাজিকভাবে একে অপরকে স্বামী স্ত্রী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করা।
আগের দিন গুরুজনেরা কনে পছন্দ করতেন হাঁটা-চলা পড়াশোনা (কলমা জানা) গায়ের রঙ দেখার মাধ্যমে। দিন পাল্টেছে। এখন পাত্র-পাত্রীর শিক্ষাগত যোগ্যতাই এখন বেশি প্রাধান্য দেয়। তারপরও মুখাবয়ব যত সুন্দরই হোক না কেন হাসতে বা কথা বলতে গিয়ে যদি দেখা যায় বর/কনের ভাঙ্গা দাঁত, ফাঁকা দাঁত, মুখে দূর্গন্ধ, কালো দাগযুক্ত দাঁত ইত্যাদি তাহলে উভয়ের পছন্দের মাঝে ডাটা পড়তেই পারে। এজন্য বিয়ের আগে বর-কনের শারিরীক সুস্থতার পাশাপাশি মুখের সুস্বাস্থ্যও নিশ্চিত করতে হবে।
যেমন বরের ক্ষেত্রে যে সমস্যাগুলো দেখায়-
০ ছেলেরা স্বভাবতই ধূমপান করে, ফলে দাঁতে কালো দাগ পড়ে। অতিরিক্ত চা-কফি পানেও এটি হতে পারে।
০ মুখে দূর্গন্ধ থাকতে পারে।
০ দাঁতে পাথর জমতে পারে।
০ পানের দাগ থাকতে পারে।
০ ভাঙ্গা দাঁতের উপস্থিতি।
০ দাঁতে ক্যারিজ থাকতে পারে।
কনের বেলায় থাকতে পারে-
০ মাড়ি লালচে এবং ফোলা ভাব।
০ মুখে দূর্গন্ধ।
০ আঁকা-বাঁকা, ফাঁকা দাঁত থাকতে পারে।
০ বিবর্ণ দাঁত।
উল্লেখিত সমস্যাগুলো বর-কনে উভয়েই থাকতে পারে। সেক্ষেত্রে সমস্যানুযায়ী প্রতিকারও আছে যেমন-
০ ধূমপান সহ অতিরিক্ত চা-কফি পানের ফলে দাঁতে কালচে দাগের সৃষ্টি হয়। সেক্ষেত্রে স্কেলিং, স্টেইন রিমুভিং ও পলিশিং এর মাধ্যমে অবাঞ্চিত দাঁত দূর করাতে হবে।
০ মুখের দূর্গন্ধের নানা কারণ আছে। যেমন-
১. কিছু খাবার আছে যা খেলে মুখে দুর্গন্ধ হয় যেমন বেশি মসলাদার খাবার, কাঁচা পেয়াজ-রসুন খাওয়া ইত্যাদি।
২. বহুদিন যাবত দাঁতে পাথর জমলে।
৩. মাড়িতে ইনফেকশন থাকলে।
৪. দীর্ঘদিন যাবত ফুসফুসের ইনফেকশনে ভুগলে।
৫. সাইনুসাইটিস থাকলে।
৬. দাঁতে ক্যারিজ থাকলে।
৭. মুখে আলসার থাকলে।
৮. মুখে ফাংগাল ইনফেকশন থাকলে ইত্যাদি।
উক্ত সমস্যাগুলো যদি থেকে থাকে তবে তার যথাযথ চিকিৎসা ডেন্টাল সার্জনের মাধ্যমে করিয়ে নিতে হবে।
০ দাঁতে পাথর জমলে অবশ্যই স্কেলিং পলিশিং করিয়ে নিতে হবে।
০ দাঁতে পানের দাগসহ কঠিন কোন দাগ থাকলে ব্লিচিং করিয়ে নেয়া যেতে পারে।
০ মুখে ভাঙ্গা-ফাটা ক্ষয়ে যাওয়া দাঁত থাকলে ক্যাপ বা ক্রাউন করে নিলে হারানো সৌন্দর্য পুরোপুরি ফিরে পাওয়া সম্ভব।
০ চোয়ালে কোথাও দাঁত না থাকলে ব্রীজের মাধ্যমে তা প্রতিস্থাপন করে নিতে হবে।
০ দাঁতে ক্যারিজ থাকলে তার অবস্থান, বিস্তৃতি ও রোগের ইতিহাস জেনে দরকার হলে এক্সরে করে ফিলিং বা রুট ক্যানেল ক্যাপ করে দাঁতের হারিয়ে যাওয়া সৌন্দর্য ফিরিয়ে আনতে হবে।
০ সুন্দর চেহারা, গায়ের রঙ ভাল ত্বক সবই উপস্থিত কিন্তু হাসলেই দেখা যায় লাল টকটকে ফোলা মাড়ি তখন সবই মাঠে মারা যায়। এক্ষেত্রে মাড়ির চিকিৎসা করাতে হবে।
০ আঁকা-বাঁকা ফাঁকা দাঁতের চিকিৎসা করাতে হবে। যেহেতু এই চিকিৎসা একটু ব্যববহুল ও সময় সাপেক্ষ তাই বিয়ের কমপক্ষে এক দেড় বছর আগে থেকে এই চিকিৎসা শুরু করতে হবে।
০ অনেক রোগীই বলেন, ‘দিনে ৪ বার দাঁত ব্রাশ করি তবুও দাঁত হলুদ, নিঃস্প্রাণ’, আর কি করলে দাঁত সাদা চকচকে সুন্দর হবে।’ আসলে বিবর্ণ দাঁতের অনেক কারণ আছে। যেমন-
১. আঘাতের ফলে সৃষ্ট বিবর্ণ দাঁত।
২. টেট্রাসাইক্লিন পিগমেন্টেশন।
৩. জনগত কারণ ইত্যাদি।
সমস্যা ও রোগের ইতিহাস জেনে দাঁত পরীক্ষা করে বিবর্ণ দাঁতে বিভিন্ন রকম চিকিৎসা দেয়া যেতে পারে। যেমন লেমিনেটিং ফিলিং, ক্রাউন ইত্যাদি হতে পারে। এছাড়াও দাঁতে ব্লিচ করা যেতে পারে। এতে দাঁত হবে ঝকঝকে সুন্দর-সাদা, বিশ্বসুন্দরী ঐশ্বরিয়া রায়ের দাঁতও ছিল হলদেটে বিবর্ণ। যথাযথ চিকিৎসার পর এখন তার দাঁত সুন্দর।
০ দাঁতে ব্যথা থাকতে পারে। সেক্ষেত্রে ব্যথার কারণ খুঁজে যথাযথ চিকিৎসা করাতে হবে।
০ এছাড়াও পেহাটাইটিস, এইড্‌স ইত্যাদি পরীক্ষা করে নেয়া যেতে পারে। স্বাস্থ্যই সকল সুখের মূল। একে পরিপূর্ণ রাখতে সুস্থ দাঁত ও মাড়িও বাদ পড়ে না। বিয়ের আগে হবু দম্পতির শারিরীক সুস্থতার পাশাপাশি মুখের সুস্থতাও অত্যন্ত জরুরি। মুখের যেকোনো সমস্যায় যথাযথ চিকিৎসার জন্য অবশ্যই অভিজ্ঞ ডেন্টাল সার্জনের পরামর্শ নিতে হবে। বছরে অন্তর দু’বার আপনার ডেন্টাল সার্জনের পরামর্শ নিন।
ডা. নাহিদ ফারজানা
দন্ত রোগ বিশেষজ্ঞ,
চেম্বার : নাহিদ ডেন্টাল কেয়ার
২১৬/বি, এলিফ্যান্ট রোড

ভালো ঘুমের জন্য টিপস্‌


ভালো ঘুমের জন্য টিপস্‌


সকলে চায় সারাদিনের ক্লান্তি শেষে রাতে ভালো ঘুম হউক। আর অনেকে ঘুমের জন্য কতনা যুদ্ধ করেন। শেষ পর্যন্ত অনেককে ঘুমের ওষুধ পর্যন্ত সেবন করতে হয়। তবে ভালো ঘুমের জন্য যা জানা দরকারঃ
০ নিয়মিত ব্যায়াম করতে হবে যাতে শরীরে অবসাদ না পেয়ে বসে।
০ সন্ধ্যা ৭টার পর কফি বা ক্যাফেইন সমৃদ্ধ খাবার ও পানীয় থেকে বিরত থাকুন।
০ ঘুমাতে যাবার অন্তত: ১ ঘন্টা পূর্ব থেকে কোন চিন্তার কাজ করবেন না। টোটাল রিল্যাক্সড মুড়ে থাকতে হবে।
০ ঘুমানোর ঘরটি হতে হবে একেবারেই কোলাহলমুক্ত।
০ ঘুমানোর সময় সব ধরণের বাতি নিভিয়ে দিন।
০ যদি ঘুম আসতে বিলম্ব হয় তবে খানিকটা লম্বা শ্বাস নিন।
০ সম্ভব হলে ১ গ্লাস হালকা গরম দুধ পান করুন।
০ রাতে গোসলের পর অয়েল ম্যাসাজ নিতে চেষ্টা করুন।
০ এসব করেও যদি ঘুম না আসে তখন চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
ডা: মোড়ল নজরুল ইসলাম

বিষাদ বিদায় শেষে


বিষাদ বিদায় শেষে

 
nafisa
জীবনের কোনো না কোনো পর্যায়ে আমরা যে কেউ ডিপ্রেশনে বা হতাশায় ভুগতে পারি। ডিপ্রেশন বা হতাশা কোন স্থায়ী রোগ নয়। যদিও অনেক বিশেষজ্ঞের মতে ডিপ্রেশনকে রোগ বলে গন্য করা হয়। কোনো কারণে দুঃখকষ্ট যখন আমাদের মনে গভীরভাবে বসে যায়, তার ফলে আমরা যখন আমাদের স্বাভাবিক কাজগুলো করতে পারি না তখনই ডিপ্রেশনের উদ্ভব হয়। দিনে দিনে এই ডিপ্রেশন ক্লিনিক্যাল ডিপ্রেশন বা ডিপ্রেসিভ ডিজঅর্ডার-এ রূপ নেয়। এর পরিণতি খুব ভাল নয়, তা আমাদের জানা। তাই ডিপ্রেশন উড়িয়ে দিয়ে কিভাবে স্বাভাবিক জীবন যাপন করা যায় তার কিছু টিপ্‌স জেনে নেয়া যাক-
০০ বিষাদ কাটাতে পছন্দসই কাজে ব্যস্ত থাকুন।
০০ প্রতিদিন একই রুটিনের জীবন-যাপন থেকে বেরিয়ে আসুন।
০০ প্রতিদিনের রুটিনে কিছু বিনোদনের সময় রাখুন। যেটা ঘরে বসে টিভি দেখা না হয়ে সিনেমা কিংবা মঞ্চে নাটক দেখা হতে পারে।
০০ যার সহচার্য ভাল লাগে তার সঙ্গে সপ্তাহে একবার আড্ডা দিন। পারলে প্রতিদিন ফোনে কথা বলুন।
০০ মাঝেমধ্যে গেটটুগেদার করুন।
০০ কর্মজীবী বলে বাড়ির কাজ করা হয়না অবসরে। একঘেয়ে ভাব দূর করতে ছুটির দিনে ঘরকন্যার কাজ করতে পারেন।
০০ যান্ত্রিকজীবন থেকে বেরিয়ে আসতে নিজে বারন্দায় গাছ লাগাতে পারেন। কোন কারণে মন বিষন্ন হলে প্রবাসী বন্ধুর সাথে চ্যাটিং করে অন্য পরিবেশে প্রবেশ করুন। বেড়াতে যান দূরে কোথাও।
০০ কাজের ব্যস্ততাকে দূরে ফেলে দু-তিন দিন সময় করে প্রকৃতির কাছাকাছি চলে যান।
০০ আপনজনের সাথে নিজের আনন্দের স্মৃতিগুলো নিয়ে আলোচনা করুন। চলে যান শৈশবে।
০০ পরিবারের সবাইকে নিয়ে দেশের বাড়িতে যেতে পারেন। নিজের শেকড় চিনতে দিন নতুন প্রজন্মকে।
০০ সমর্থ হলে প্রতিবেশি কোন দেশে ট্যুর করতে পারেন।
লক্ষ্যণীয়
০০ এক জায়গায় আটকে থকবেন না।
০০ ইতিবাচক চিন্তা করুন।
০০ আত্মমর্যাদা বৃদ্ধি করুন।
০০ যেকোনো সম্পর্কের ক্ষেত্রে নিঃস্বার্থ হোন
০০ যেকোনো সমস্যা নিয়ে আলোচনা করুন। আলোচনার সময় নিরপেক্ষ হন।
০০ শেয়ার করুন। মন খুলে কথা বলুন।
০০ ভাল বই, ভাল গান এবং ভাল সিনেমা দেখুন।
০০ সবাইকে বন্ধু ভাবুন।
০০ শপিং করুন। নিজেকে নিয়ে ব্যস্ত থাকুন। বিউটিপার্লারে যেতে পারেন।
০০ খাবারের মেন্যুতে ভিন্নতা আনতে পারেন।
মডেল নাফিসা ছবি সাফাওয়াত খান সাফু

চোখ উঠলেই আঁতকে ওঠা নয়


চোখ উঠলেই আঁতকে ওঠা নয়

 
চোখ ওঠা রোগকে চিকিৎসাশাস্ত্রে কনজাংটিভাইটিস বা পিংক আই বলে। রোগটি অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ভাইরাসের কারণে হয়ে থাকে। কখনো কখনো রোগটি ব্যাকটেরিয়া, অ্যালার্জি কিংবা কেমিক্যালের কারণেও হতে পারে। এটা এক ধরনের ছোঁয়াচে রোগ। মানুষ থেকে মানুষে সংক্রমিত হয়। আক্রান্ত ব্যক্তির ধরা বস্তু ও পানির মাধ্যমেও রোগটি ছড়াতে পাড়ে। প্রধান উপসর্গের মধ্যে চোখ লাল হওয়া, চোখে ঝাপসা দেখা, চোখ দিয়ে পানি পড়া এবং চোখের কোণে ময়লা জমা উল্লেখযোগ্য। অ্যালার্জিজনিত কারণে চোখ উঠলে প্রধান চিকিৎসা হলো চোখে ঠান্ডা পানির ঝাপটা দিতে হবে। এবং এ ক্ষেত্রে কখনো কখনো নন-স্টেরয়েড অ্যান্টি ইনফ্ল্যামেটরি ওষুধ অথবা অ্যান্টি হিস্টামিন দেওয়া যেতে পারে। ব্যাকটেরিয়াজনিত কারণে চোখ উঠলে কোনো ধরনের চিকিৎসা ছাড়াই এটি ভালো হয়ে যায়। আর যদি রোগটি তিন দিনের বেশি স্থায়ী হয় অ্যান্টিবায়োটিক চোখের ড্রপ অথবা মলম ব্যবহার করা যেতে পারে। ভাইরাসজনিত কারণে চোখ ওঠার নির্দিষ্ট কোনো চিকিৎসা নেই। এ ক্ষেত্রে ঠান্ডা পানি এবং কৃত্রিম চোখের পানি দিলে ভালো ফল পাওয়া যাবে। কেমিক্যালের কারণে চোখ ওঠার ক্ষেত্রে রিঙ্গার ল্যাকটেট অথবা স্যালাইন পানি দিয়ে চোখ ধুতে হবে। কোন কারণে চোখ উঠেছে নিশ্চিত হতে হলে করতে হবে সোয়াব কালচার পরীক্ষা। প্রায় ৬৫ ভাগ ক্ষেত্রে কোনো ধরনের চিকিৎসা ছাড়াই চোখ ওঠা ভালো হয়ে যায়। এবং রোগটি স্থায়ী হতে পারে দুই থেকে পাঁচ দিন। তাই এই রোগ নিয়ে সত্যিই আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই।
— সিদ্ধার্থ মজুমদার

মাথা খাটিয়ে মাথা ব্যথা দূর


মাথা খাটিয়ে মাথা ব্যথা দূর


ঘাড়ের উপর মাথা থাকলে ব্যথাতো হতেই পারে। আর একটু আধটু ব্যথার জন্য নিজে নিজে ওষুধ খেয়ে ফেলাটাও কোন কাজের কথা না। আগে থেকে কিছুটা সতর্ক হলে মাথা ব্যথার মতো ঝামেলা এড়ানো যায় কিন্তু সহজেই।
মাছের তেলে
মাছ খেতে হবে প্রতি বেলায়। পুষ্টির চাহিদা তো মিটবেই মাথা ব্যথা প্রতিরোধেও কার্যকর মাছ। মাছের তেলে থাকে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড। এটিই মূলত মাথা ব্যথার বিরুদ্ধে কাজ করে। মাছের তেলের ক্যাপসুল পাওয়া যায় বাজারে। চিকিৎসকের পরামর্শে নিয়ম করে খেতে পারেন ক্যাপসুলটি।
আপেলে
রোজ সকালে ঘুম থেকে উঠেই যারা মাথা ব্যথায় ভোগেন তাদের সমাধান আপেলে। আপেলের বাইরের আস্তরন ফেলে সামান্য লবণ মিশিয়ে খেতে হবে সকালে খালি পেটে। এভাবে চলবে টানা দুই সপ্তাহ।
আদা
আদার উপাদানগুলো থ্রম্বোক্সিনকে কাজে লাগিয়ে শরীরে রক্ত সঞ্চালন স্বাভাবিক রাখে। যেটা মাইগ্রেইনের ব্যথা প্রতিরোধে খুব কার্যকর। এ ছাড়া আদায় বমিভাব দূর হয়, দূর হয় মাথা ব্যথা।
বসার ভঙ্গিতে
দেহকে বাকিয়ে বা হেলে দীর্ঘক্ষণ বসলে স্নায়ুকোষ উদ্দীপ্ত হয়। এ থেকে তৈরি হতে পারে মাথা ব্যথার মতো অনাবশ্যক সব রোগ। তাই বসতে হবে সোজা হয়ে। দাঁড়াতে হবে আরও সোজা হয়ে।
সিদ্ধার্থ মজুমদার

ডায়াবেটিক রোগীদের জন্য মেথি


ডায়াবেটিক রোগীদের জন্য মেথি

 
মেথিকে মসলা, খাবার, পথ্য—তিনটাই বলা চলে। মেথির স্বাদ তিতা ধরনের। এতে রয়েছে রক্তের চিনির মাত্রা কমানোর বিস্ময়কর শক্তি। প্রতিদিন সকালে খালি পেটে মেথি চিবিয়ে খেলে বা এক গ্লাস পানিতে মেথি ভিজিয়ে রেখে সেই পানি খেলে শরীরের রোগ-জীবাণু মরে, বিশেষত কৃমি মরে, রক্তের চিনির মাত্রা কমে। রক্তে ক্ষতিকর কোলেস্টেরল বা চর্বির মাত্রা কমে যায়। এই গরমে ত্বকে যে ঘা, ফোড়া, গরমজনিত ত্বকের অসুখ হয়, এই অসুখগুলো দূর করে মেথি। বার্ধক্যকে দূরে ঠেলে দিয়ে তারুণ্যকে দীর্ঘস্থায়ী করতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে মেথি। গবেষণা করে দেখা গেছে, যে ডায়াবেটিক রোগীরা নিয়মিত মেথি খান, তাঁদের ডায়াবেটিসজনিত অসুখগুলো কম হয় এবং স্ট্রোক হওয়ার প্রবণতা তুলনামূলকভাবে কম। ডায়াবেটিক রোগীদের জন্য মেথি শ্রেষ্ঠ পথ্য।
যাদের ডায়াবেটিস নেই মেথি তাদের জন্যও জরুরি। মাতৃদুগ্ধ বৃদ্ধির জন্য কালো জিরার মতো মেথি পিষে খাওয়াটাও যথেষ্ট উপকার। তবে খেয়াল রাখতে হবে, মেথি ভেজে পিষলে পুষ্টি সব নষ্ট হয়ে যাবে। রৌদ্রে শুকিয়ে নিয়ে ভাজলে খেতে মচমচে লাগবে। মেথি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে, শরীরকে রাখে সতেজ। রক্তের উপাদানগুলোকে করে কর্মক্ষম। ফলে মানুষের কর্মোদ্দীপনাও বৃদ্ধি পায়। মৌসুমি রোগগুলোর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে। নানাবিধ গুণের জন্যই মেথি হোক আপনার পরিবারের সদস্য।
ফারহানা মোবিন

মাছ খাবেন ভালো থাকবেন


মাছ খাবেন ভালো থাকবেন

 
fish
তবু মাছ খেতে বলব।
ফরমালিন দেওয়া হচ্ছে, এর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলুন।
মানুষ না চাইলে কোনো ব্যবসা চলতে পারে না। হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা সম্প্রতি দেখেছেন, যাঁরা প্রতি সপ্তায় তৈলাক্ত মাছ খান, যেসব মাছে আছে প্রচুর ওমেগা-৩ মেদ অম্ল—এদের করোনারি হূদেরাগে মৃত্যুর ঝুঁকি কমে ৩৬ শতাংশ। যাঁরা নিয়মিত মাছ খান, তাঁদের স্ট্রোক, বিষণ্নতা, বয়সের কারণে মগজের অধোগতি ঝুঁকি কম। অনেক ক্রনিক অবক্ষয়ী রোগের শঙ্কাও তাঁদের কম।
শীতল পানির মাছের কথাই বেশি বলা হয়, যেমন—স্যামন, ট্রাউট, টুনা, তেলাপিয়া। আবার এসব মাছ খামারেও হয়।
বিশেষজ্ঞরা দেখছেন, খামারে চাষ করা এসব মাছের মধ্যে কোন মাছটি কম হূদ্স্বাস্থ্যকর। বলছেন তেলাপিয়া মাছের কথা। এতে নাকি ওমেগা-৩ মেদ অম্ল কম, সে জন্য কম হূদ্স্বাস্থ্যকর টুনা, স্যামন, ট্রাউট মাছের চেয়ে। তেলাপিয়ায় বেশি আছে ওমেগা-৬ মেদ অম্ল—এই অম্লও স্বাস্থ্যকর বটে।
মাছ খাওয়া স্বাস্থ্যকর কেন? বিশেষ করে হূদ্স্বাস্থ্যকর?
কারণ এতে রয়েছে ওমেগা-৩ মেদ অম্ল। মাছ ও মাছের তেলে যে ধরনের ওমেগা-৩ মেদ অম্ল রয়েছে, এর নাম হলো ইপিএ ও ডিএইচএ। মাছে আছে ওমেগা-৬ মেদ অম্লও। স্বাস্থ্যের জন্য এও ভালো।
ওমেগা-৩ শরীরে বিশেষ তৈরি হয় না, তাই এর জোগান লাগে। ওমেগা-৬ শরীরে আসে মাছ ছাড়াও অন্যান্য উ ৎস থেকে।
আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশন বলে, হূদ্সুখের জন্য সপ্তাহে মাছের অন্তত দুটো সার্ভিং অবশ্য চাই। প্রতিটি সার্ভিং মানে ৩ দশমিক ৫ আউন্স রান্না করা মাছ বা ৩/৪ কাপ (এক কাপের চার ভাগের তিন ভাগ) মাছ।
যুক্তরাষ্ট্রের ইউএসডিএর পরামর্শ, সপ্তাহে ৮ আউন্স মাছ। মিষ্টি পানি বা লোনা পানি—দুটোরই মাছ।
শামুকজাতীয় মাছে চর্বি সবচেয়ে কম। থাইল্যান্ডে দেখেছি, মানুষ শামুক খায় অবলীলায়, খুঁটে খুঁটে।
সেলফিশ—এমনকি কাঁকড়া, গলদাচিংড়ি, শামুক—এসব মাছ। অবশ্য চিংড়ি মাছের মগজে খুব কোলেস্টেরল। সেলফিশে আনস্যাচুরেটেড চর্বি বেশি, স্যাচুরেটেড চর্বি কম। প্রোটিনও আছে।
আটলান্টিক মহাসাগরের স্যামন মাছে ওমেগা-৩ মেদ অম্ল সবচেয়ে বেশি। ৪ আউন্স স্যামন মাছে ১২০০-২৪০০ মিলিগ্রাম ওমেগা-৩ মেদ অম্ল আছে।
নদী আর সমুদ্রের মাছের চেয়ে খামারে চাষ করা মাছে ওমেগা-৩ মেদ অম্ল কম—এ কথাও ঠিক নয় পুরোপুরি।
কিছু প্রজাতি যেমন স্যামন, ম্যাকবিল, হেরিং, ট্রাউট—এরা খামারে হোক বা খরস্রোতা নদীতে বা সাগরে হোক, ওমেগা-৩ বেশি থাকে।
আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশন জানিয়েছে, মাছ থেকে ওমেগা-৩ মেদ অম্ল আহরণ করাই শ্রেষ্ঠ। তবে যাঁরা হূদেরাগের রোগী বা যাঁরা কোনো কারণে যথাযথ পরিমাণ ওমেগা-৩ পাচ্ছেন না খাবারে, মাছের তেল সাপ্লিমেন্ট গ্রহণই ভালো। তবে চিকি ৎসককে জিজ্ঞেস করে নেবেন। মাছকে কেমিক্যাল দিয়ে দূষিত করে বাজারজাত করা যেমন একটি স্বাস্থ্যঝুঁকি, তেমনি স্বাস্থ্যঝুঁকির ব্যাপারে জলজ প্রাণী মাছও নানা কারণে জলাশয়ে ডায়োক্সিন, পিসিবি, পারদ ও কীটনাশক অন্যগুলো দ্বারা দূষিত হতে পারে। তাহলে মাছ খাব না? তা কেন? জঙ্গলে সাপ আছে বলে জঙ্গলে যাবে না? পথে যন্ত্রদানব আছে বলে, পথে নামব না? পথে নামব। প্রতিরোধও করব। মাছে মাঝেমধ্যে কৃমি, পরজীবী—এসব থাকতে পারে। তবে মাছ ভালো করে যথাযথ রান্না করলে এসব থাকে না। কাঁচা মাছ বা আধা সেদ্ধ মাছ খাওয়া ঠিক নয়। ফিতা কৃমির আশঙ্কা বেশি। মাছকে ১৪০০ ডিগ্রি তাপে যথাযথ রান্না করলে কীট, পরজীবী ধ্বংস হয়ে যায়। সঠিক হিমায়িত না থাকলে কাঁচা মাছ খাওয়া ঠিক নয়, রান্না করেও। পারদ বা কীটনাশকের জন্য গর্ভবতী মহিলা বা দুগ্ধবতী মহিলাকে মাছ থেকে বারণ করা ঠিক নয়—বলেছে ইউএসডিএ।
মাছের ছাল ছাড়িয়ে ফেললে কীটনাশক যেমন পিসিবি বা ডায়োক্সিন দূষণ অনেক কমে যায়। সামুদ্রিক মাছ বেশ স্বাস্থ্যকর; তবে অনেকের অ্যালার্জি হয়। চিংড়ি, শামুক, কাঁকড়াতে অনেকের অ্যালার্জি। মাছ ভাজা স্বাস্থ্যকর নয় বলে জানায় হূদেরাগ সমিতি। সেঁকা, ভাপে সেদ্ধ ও ঝলসানো মাছ ভালো।
অধ্যাপক শুভাগত চৌধুরী
পরিচালক, ল্যাবরেটরি সার্ভিসেস বারডেম হাসপাতাল,
সাম্মানিক অধ্যাপক, ইব্রাহিম মেডিকেল কলেজ, ঢাকা।

চোখের জ্বালাপোড়ায় করণীয়


চোখের জ্বালাপোড়ায় করণীয়

 
কারণ কী?
 চোখের পানি শুকিয়ে যাওয়া
 চোখের অ্যালার্জি
 বাতরোগ
 চোখের পাপড়ির গোড়ায় প্রদাহ
 চোখের অপারেশন
 ঘুমের সময় চোখ বন্ধ না হওয়া
 চোখের কালো মণিতে ভাইরাস সংক্রামণ
 কালো ধোঁয়া, ধুলোবালি চোখে পড়লে
 চোখে রাসায়নিক পড়লে। যেমন—চুন, এসিড ইত্যাদি
 চোখে ওষুধের রিঅ্যাকশন হলে (স্টিভেন জনসন সিনড্রোম)
 চোখের ড্রপ ব্যবহারেও প্রাথমিক অবস্থায় চোখ জ্বলতে পারে।
করণীয়
 রাস্তাঘাটের কালো ধোঁয়া ও ধুলোবালি থেকে চোখ রক্ষা করার জন্য সানগ্লাস ব্যবহার করুন।
 চোখের পানি কমে গেলে দেরি না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে চোখে কৃত্রিম চোখের পানি ড্রপ হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে।
 পানি শুকিয়ে যাওয়ার কারণ যেমন—বাতরোগ, শোগ্রেন সিনড্রোম ইত্যাদি রোগের চিকিৎসা করাতে হবে।
 সালফার-জাতীয় ওষুধে যাদের অ্যালার্জি আছে, তাদের তা বর্জন করতে হবে।
 চিকিৎসকের পরামর্শে চোখের অ্যালার্জি এবং কর্নিয়ায় ভাইরাস সংক্রমণের চিকিৎসা করাতে হবে।
 চোখ বেশিক্ষণ বন্ধ রাখলে অনেক ক্ষেত্রে চোখের জ্বালা কমে। সে জন্য পর্যাপ্ত ঘুমের প্রয়োজন।
 চোখে কেমিক্যাল পড়লে সঙ্গে সঙ্গে চোখে বেশি করে পানি দিয়ে অনেক সময় ধরে ধুয়ে ফেলতে হবে। তারপর দেরি না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
 চোখে ড্রপ দেওয়ার কারণে চোখ জ্বললে ভয় পাবেন না। আস্তে আস্তে কমে যাবে। মূল রোগের চিকিৎসা বন্ধ করবেন না। প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন।
শামস মোহাম্মদ নোমান
চক্ষু বিশেষজ্ঞ, চট্টগ্রাম চক্ষু হাসপাতাল ও প্রশিক্ষণকেন্দ্র পাহাড়তলী, চট্টগ্রাম

কেমন বয়সের মেয়ে বিয়ে করা উচিৎ


কেমন বয়সের মেয়ে বিয়ে করা উচিৎ

 
পুরুষের সমস্যা
ইতিপূর্বে একাধিকবার পুরুষের পাত্রী নির্বাচন এবং শারীরিক সমস্যা নিয়ে লিখেছি। এখনও আমাদের সমাজে অনেক ক্ষেত্রে ধারণা করা হয়ে থাকে পুরুষের আবার বিয়ের বয়স কিসের। পুরুষ মাত্রেই যে কোন বয়সের একটি মেয়েকে ঘরে তুলতে পারে কিন্তু বিষয়টির সামাজিক প্রেক্ষাপটের চেয়ে শারীরিক বিশ্লেষণ বেশী গুরুত্ব দেয়া উচিত। এই মুহূর্তে বিয়ের ক্ষেত্রে পাত্র-পাত্রীর বয়স নিয়ে লেখার কোন ইচ্ছেই ছিলো না। পুরুষের অন্য একটি বিষয় লিখবো ভেবেছিলাম। কারণ আমার এক পুরুষ রোগীর দীর্ঘদিন পর পিতা হবার চিকিৎসার পেক্ষাপট নিয়ে লিখতে চেয়েছিলাম। এ বিষয়টি পরে লেখা যাবে। যাহোক যা বলছিলাম, দু’তিন, দিন আগে আমার চেম্বারে একটা মেয়ে আসে। উজ্জ্বল শ্যামলা। শরীরের গড়ন হালকা। মেয়ে বললে ভুল হবে, কিশোরী বলাই ভালো। নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে বাড়ী। সোনারগাঁও বললে, আমি নানা কারণে কিছুটা দুর্বল হয়ে পড়ি। তার একটি কারণ হচ্ছে আমার লেখনীর শিক্ষাগুরু প্রখ্যাত সাংবাদিক লেখক ও কলামিষ্ট জনাব শফিকুল কবির এর বাড়ী এই সোনারগাঁওয়ে। যাই হোক, সোনারগাওয়ের সেই মেয়েটি বললেন, আমি ফর্সা হতে চাই ডাক্তার সাহেব। আমি বললাম তুমিতো অনেক সুন্দর এবং তোমার গায়ের রং যথেষ্ট ভালো। মিয়েটিকে আশ্বস্ত করতে বললাম, আমার মেয়ের গায়ের রং ও তোমার মত। তাছাড়া ত্বক ফর্সা করার কোন চিকিৎসা নেই। আজকাল কিছু কিছু বিউটি পার্লারের অপপ্রচারে বিভ্রান্ত হয়ে তরুণী-মহিলারা ছুটছেন তক ফর্সা করতে। আসলে ত্বক ফর্সা করার কোন ব্যবস্থা চিকিৎসা শাস্ত্রে নেই। বহুবার বলেছি আমি আমেরিকা ও সিঙ্গাপুরের দু’টি বিখ্যাত হাসপাতালে স্কিন, লেজার ও কসমেটিক সার্জারির ওপর উচ্চতর প্রশিক্ষণ নেয়ার সময় কখনও ত্বক ফর্সা করা সম্ভব এমন কথা শুনিনি। কখনও কেউ বললেনি ত্বক ফর্সা করা যায়। তবে আজকাল লেজার টেকনোলজির সুবাধে ত্বক ব্রাইট করা যায়, ফর্সা করা যায় না। মুখের ব্রাউন স্পট, পিগমেন্ট, তিল, মোল, আঁচিল, অবাঞ্ছিত লোম দূর করা যায়। ত্বক ফর্সা করার কোন লেজার ও চিকিৎসা এখনও বের হয়নি। তবে তথাকথিত হুয়াইটিনিয সিস্টেমের নামে মুখের ত্বক পুড়িয়েং দিয়ে ফর্সা করার মারাত্মক ক্ষতিকর উপায় নিয়ে দু’একটি বিউটি পার্লার প্রচার করে থাকে। এসব অবৈজ্ঞানিক মারাত্মক ক্ষতিকর হুয়াইটিং সিস্টেম নিয়ে আর একদিন বিস্তারিত লিখবো।
সোনারগাঁও এর ঐ মেয়েটির কাছে জানতে চাইলাম- তুমি কেন ত্বক ফর্সা করতে চাইছো। প্রথমে মেয়েটি সংকোচ বোধ করলেও সে জানালো আমার বিয়ে হয়েছে একমাস। স্বামী আমেরিকা প্রবাসী। বর্তমানে দেশে আছে। স্বামী চায় আরও ফর্সা ত্বক। এরপর জানতে চাই তোমার স্বামী কোথায়। মেয়েটি বললো ও আমার সঙ্গেই এসেছে। ধারণা ছিলো অষ্টম শ্রেণীর ছাত্রী ১৪/১৫ বছরের মেয়েটির স্বামীর বয়স ২০/২২-এর বেশী হবে না। ওমা বয়সে ৩৮/৪০ এর কম হবে না। প্রথম মিনিট খানেক ভীষণ রাগ হয়েছিলো। যাহোক, রোগীদের ওপর রাগ করার কোন অধিকার ডাক্তারের নেই। স্বাভাবিক হয়ে জানাতে চাইলাম আপনার নতুন বিবাহিত জীবন কেমন কাটছে। এরপর বেশখানিকটা সময় নিয়ে কথা হলো। ত্বক ফর্সা করার ভুল ধারণা ভেঙ্গে দিয়ে কিশোরী মেয়েটিকে বাইরে যেতে বললাম। এর পর মধ্যবয়স্ক যুবকের কাছে জানতে চাই কেন আপনার অর্ধেকের চেয়ে কম বয়সের একটি মেয়েকে বিয়ে করেছেন। যুবকটি কোন সদুত্তোর দিতে পারলেন না। এই যুবকটি ঢাকার একটি নামকরা কলেজ এবং একটি নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলেন। এরপর যুক্তরাষ্ট্রে চলে যান। যুবকটি জানালেন এখনই তাদের ব্যক্তিগত জীবনে সমস্যা হচ্ছে। বললেন ডাক্তার সাহেব শরীর ঠিক রাখতে কোন ওষুধ দেয়া যাবে কিনা। আমি দু’একটি মামুলি প্যাথলজিক্যাল পরীক্ষা করতে দিয়ে আর একদিন আসতে বলি।
সুপ্রিয় পাঠক, আজ থেকে ১০ বছর পরের একটি দৃশ্যের কথা চিন্তা করুন। যখন সোনারগাওয়ের কিশোরী মেয়েটির বয়স হবে ২৫। পরিপূর্ণ এক যুবতী। আর যুবকটির বয়স হবে ৪৮/৫০। এ বয়সে নিশ্চয়ই দু’জনের চাওয়া-পাওয়ার ক্ষেত্রে থাকবে অনেক ব্যবধান। এখানে আজকের কিশোরীটির চিরায়ত বাঙালী চরিত্রের রূপায়ণ অর্থাৎ সব কিছু নিরবে মেনে নিয়ে বয়স্ক স্বামীর ঘর করা অথবা পরিবারের সকলের অমতে ভিন্ন চিন্তা করাই কিন্তু আমাদের মত রক্ষণশীল সমাজে সব সময় ছাড়া উপায় নেই। কাজটি করতে পারে না অথবা করে না। যাহোক, আমাদের দেশে এখনও আইন বলবৎ আছে মেয়েদের ১৮ বছরের নীচে এবং পুরুষের ২১ বছরের কম বয়স বিয়ে করা উচিত নয়। বয়সের পার্থক্য কেমন হবে তা অবশ্য আইনে বলা নেই। তবুও একজন নগন্য সেক্সোলজিষ্ট হিসেবে আমার নিজস্ব অ্যাসেসমেন্ট হচ্ছে বিয়ের ক্ষেত্রে নারী-পুরুষের বয়সের ব্যবধান বেশী থাকা বাঞ্ছনীয় নয়। এছাড়া কোন অবস্থাতেই মেয়েদের ১৮ বছরের নীচে বিয়ে দেয়া উচিত নয়। সম্ভব হলে মেয়েদের নূন্যতম বিয়ের বয়স ২০ বছর নির্ধারন করা উচিৎ। বিয়ের ক্ষেত্রে ছেলে-মেয়েদের একই বয়সী না হলে বয়সের ব্যবধান সর্বোচ্চ ৫/৭ বছরের মধ্যে থাকা ভালো। তবে যে কোন মেয়ে তার পরিপূর্ণ বয়সে যে কোন বয়সের পুরুষদের বিয়ে করার আইনগত অধিকার রাখেন। এটা নিশ্চয়ই তার নিজস্ব ব্যাপার। তবে অপরিণত মেয়েদের ক্ষেত্রে স্বামীর বয়স নির্ধারণ করার দায়িত্ব অবশ্যই অভিভাবক বা পিতা-মাতার। শারীরিক ও মানসিক সমস্যা এড়াতে অবশ্যই স্বামী-স্ত্রীর বয়সের ব্যবধান কম হওয়া উচিত। পাশাপাশি যদি কেউ বেশী বয়সে বিয়ে করতে চান তাদের অবশ্যই সতর্কতা অবলম্বন করা উচিৎ। এতে ভবিষ্যতে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে সৃষ্ট নানা সমস্যা এড়ানো যায়।
—————————–
ডাঃ মোড়ল নজরুল ইসলাম
চুলপড়া, যৌন সমস্যা, পুরুষ বন্ধ্যাত্ব চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ
এবং লেজার এন্ড কসমেটিক্স সার্জন
বাংলাদেশ লেজার স্কিন সেন্টার

অজ্ঞতার কারণে ভেঙ্গে যাচ্ছে শত শত বিয়ে


অজ্ঞতার কারণে ভেঙ্গে যাচ্ছে শত শত বিয়ে

 
অনেকে আমাকে বলছেন পুরুষের সমস্যা নিয়ে লেখাটি ভিন্ননামে প্রকাশ করা উচিৎ। অনেকে বলেছেন, এ ধরনের লেখা প্রকাশের ক্ষেত্রে সতর্ক থাকা উচিৎ ইত্যাদি। আমি এ ধরনের সুশীল পাঠকদের সঙ্গে একমত। যে কারণে আমি সবসময় মার্জিত শব্দ ব্যবহার করার চেষ্টা করি। আসলে আমাদের বিভিন্ন ক্ষেত্রে যে ধরনের পশ্চাদপদতা রয়েছে তারমধ্যে এটাও একটা। আমার মনে আছে দেশে এক সময় পাইলস-এর আধুনিক চিকিৎসা হতো না। বর্তমানে একজন সনামধন্য পাইলস চিকিৎসক আসলেন আমার কাছে। তা প্রায় এক যুগেরও বেশি সময় আগে। তার ইচ্ছে ছিলো ল্যাপারোস্কপিক সার্জন হবেন। ল্যাপারোস্কপি সার্জারীতে তখন জাপান ফেরৎ ডাঃ সরদার নাঈমের রমরমা অবস্থা। আমি ডাক্তার সাহেবের কাছে জানতে চাই আর কি কি বিষয়ের উপর আপনি প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। সিঙ্গাপুর ফেরৎ ডাক্তার বললেন-পাইলস বা মলদ্বার দিয়ে রক্ত পড়া সমস্যার ক্ষেত্রে তিনি বিনা অপারেশনে চিকিৎসা পদ্ধতির ওপর প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। আমি তাকে পাইলস-এর ওপর স্বাস্থ্য পাতায় লিখতে বলি। তিনি আমার কথাতে নিমরাজি ছিলেন। তবুও শেষ পর্যন্ত আমার পরামর্শ মেনে নেন। দেশে আধুনিক পাইলস চিকিৎসার স্থপতি বলা যায় এই নবীন সার্জনকে। পাঠক যা আমি বলতে চাই, পাইলস বা মলদ্বার বা পায়ুপথের সমস্যা লেখার ক্ষেত্রে যেসব শব্দ ব্যবহারের প্রয়োজন পড়ে তা মোটেও পাঠযোগ্যনয়। তবুও দেশের লাখ লাখ অপচিকিৎসার শিকার পাইলস রোগীদের সচেতন করতে আমরা পাইলস ও পায়ুপথের নানা সমস্যা নিয়ে সিরিজ রিপোর্ট লিখেছি। আজ বেশীরভাগ পাইলস রোগী আর অপচিকিৎসার শিকার হচ্ছেন না।
দ্বিতীয় আর একটি উদাহরণ দেবো। ইউরোপের একটি দেশে টিন এজারদের গর্ভপাতের ঘটনা আশংকাজনকভাবে বেড়ে গেলো। কোন কিছুতেই বালিকা মেয়েদের গর্ভপাতের হার কমানো যাচ্ছিলো না। তখন দেশটির স্বাস্থ্যমন্ত্রী অনাকাঙিক্ষত গর্ভধারণ রোধে টিন এজারদের কনডোম ব্যবহারে উৎসাহ দিলেন। পাশাপাশি এটাও বলা হলো, পিতা-মাতাগণ সন্তানদের যেন সমস্যাটি নিরসনে সহায়তা করেন। এমনকি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেও যৌন শিক্ষার ওপর আলোচনার তাগিদ দেয়া হলো। যদি উন্নত বিশ্ব এ ক্ষেত্রে উদার মনোভাবের পরিচয় না দিতো তাহলে নিশ্চয়ই অনাকাঙিক্ষত গর্ভপাত হ্রাস পেতো না। যৌন শিক্ষার বিষয়টি অবশ্যই স্পর্শকাতর। তবুও সামাজিক প্রয়োজনে এবং আধুনিক চিন্তা চেতনা থেকে মার্জিতভাবে এ বিষয়টি দেখতে হবে।
আর একটি উদাহরণ দেবো। বছর কয়েক আগে আমি একটি জার্মান প্রতিনিধি দলের সদস্য হয়ে কম্বোডিয়া গিয়েছিলাম। কম্বোডিয়ায় কালব্যাধি এইডস এর মরণ ছোবলে দেশটির সামাজিক ও পারিবারিক সংকট ছিলো ব্যাপক। কোনভাবেই পুরুষদের পতিতালয় যাওয়া বন্ধ করা যাচ্ছিল না। কারণ মাত্র এক ডলার অর্থ ব্যয় করলেই একজন বিনোদন সঙ্গিনী পাওয়া যায়। শেষতত দেশটিতে ঘাতক ব্যাধি এইডস প্রতিরোধে স্ত্রীরা একটি বিশেষ ধরনের প্রচারনা চালাতে শুরু করেন। আর তা হচ্ছে, ‘অন্য নারীর কাছে যাও, তবে কনডম ব্যবহার করো। মূল আলোচনায় ফিরে আসি। আমি বিশ্বাস করি প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়াতে তরুণ প্রজন্মকে বিপথগামীতা থেকে রক্ষার জন্য যৌন শিক্ষামূলক আরও আলোচনা প্রয়োজন। এই উদ্যোগের কণ্ঠরোধ করলে দেশের লাখ লাখ তরুণ অপচিকিৎসার শিকার হবে। ভেঙ্গে যাবে হাজারো নতুন ঘর। আমি এমন কোন দিন পাইনা যেদিন আমার চেম্বারে শারীরিক কারণে বিয়ে ভেঙ্গে গেছে এমন রোগী আসে না। এমনও দিন আছে দুই তিন জন এ ধরনের পুরুষ রোগী পাই। অথচ আমি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখেছি এসব স্ত্রী পরিত্যাক্ত পুরুষদের শতকরা ৯৫ থেকে ৯৮ ভাগের কোন প্রকার শারীরিক সমস্যা নেই। শুধু মাত্র অজ্ঞতার কারণে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে এ ধরনের দুঃখজনক পরিণতি হচ্ছে। সবচাইতে আশ্চর্যজনক ব্যাপার হচ্ছে, যৌন জীবন নিয়ে অজ্ঞতার তালিকায় ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, পোশাক ধারী লোকজন এমনকি সাংবাদিকগণও রয়েছেন। তাই আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি দেশের জনসংখ্যার এই বিরাট অংশকে ভুল ধারণা থেকে রক্ষার জন্য আরও শিক্ষামূলক লেখনি চালু করা উচিৎ। প্রয়োজন গণমাধ্যমের সহযোগিতা এবং সরকার ও সুশীলসমাজের ভূমিকা। কিছু কিছু পাঠকের অনুরোধে আজ থেকে পুরুষের সমস্যা শিরনাম বদল করে হেলপ লাইন করা হলো। আগামীতে হেলপ লাইন বিভাগে নারীদের শারীরিক সমস্যা নিয়ে আলোচনা করা হবে। আগামী সংখ্যায় অজ্ঞতার কারণে বিয়ে ভাঙ্গার কারণ নিয়েও বিস্তারিত লিখবো।
———————-
ডাঃ মোড়ল নজরুল ইসলাম
চুলপড়া, যৌন সমস্যা ও চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ এবং লেজার এন্ড কসমেটিক্স সার্জন
বাংলাদেশ লেজার স্কিন সেন্টার

মূত্রনালির কিছু সমস্যা ও সমাধান


মূত্রনালির কিছু সমস্যা ও সমাধান

 
kidney-problem
শরীর থেকে বর্জ্য নিঃসরণ কিডনি ও মূত্রতন্ত্রের মূল কাজ। শরীরে পানি ও লবণের মাত্রা নিয়ন্ত্রণেও কিডনি মূত্রতন্ত্র রাখে বিশেষ অবদান। বর্জ্য নিঃসরণে মূত্রতন্ত্রের অপর্যাপ্ত ক্ষমতা বা অক্ষমতায় এসব বর্জ্য শরীরে জমা হয়ে আমাদের শরীরের সুস্থ আবহকে বিঘ্নিত করে।
স্বাভাবিক প্রস্রাবের অভ্যাস কেমন?
একজন মানুষ ২৪ ঘণ্টায় সাধারণত ২ দশমিক ৫ থেকে তিন লিটার পানি বা পানীয় পান করে থাকে।
কিডনির কাজ করার ক্ষমতা স্বাভাবিক থাকলে, পারিপার্শ্বিক আবহাওয়ার খুব বড় তারতম্য না হলে প্রতি ২৪ ঘণ্টায় এক হাজার ৫০০ সিসি প্রস্রাব কিডনি তৈরি করে থাকে। আমাদের শরীর থেকে কিছু পানি ঘাম আকারে, কিছু পানি শ্বাস-প্রশ্বাসের সঙ্গে, কিছু পানি মলের সঙ্গে বের হয়ে যায়।
যেহেতু আমাদের প্রস্রাবের থলির স্বাভাবিক ধারণক্ষমতা ৩০০ সিসি, তাই স্বাভাবিকভাবে একজন মানুষ ২৪ ঘণ্টায় পাঁচবার প্রস্রাব করে থাকে।
সাধারণত দিনে চারবার আর রাতে একবার।
তবে নানাবিধ স্বাভাবিক বা অস্বাভাবিক কারণে বারবার প্রস্রাবের প্রবণতা দেখা দিতে পারে, আবার কমেও যেতে পারে। যদি আমরা অতিরিক্ত পানি বা তরলজাতীয় খাবার খাই, তবে প্রস্রাবের পরিমাণ বেশি হয়, বারবার প্রস্রাব হয়। বারবার প্রস্রাব হয় ডায়াবেটিসেও। অন্যদিকে পুরুষের ক্ষেত্রে বয়োবৃদ্ধির সঙ্গে বয়সজনিত স্বাভাবিক পরিবর্তন হিসেবেই বৃদ্ধি ঘটে প্রোস্টেট গ্রন্থির। প্রোস্টেট গ্রন্থি প্রস্রাব প্রবাহে বাধার সৃষ্টি করে। ফলে প্রস্রাবের থলি সব সময় সম্পূর্ণ খালি হয় না। আর বৃদ্ধি পাওয়া প্রোস্টেট সৃষ্টি করে প্রস্রাবের থলির মুখে এক ধরনের অস্বস্তি।
বয়োবৃদ্ধির কারণে নারী-পুরুষনির্বিশেষে সবার প্রস্রাবের থলিরই ধারণক্ষমতা কমে যায়। বারবার প্রস্রাব করার প্রবণতা বেড়ে যায়।
প্রস্রাব করা বা না করার এই নিয়ন্ত্রণ কি সব সময় রক্ষা করা সম্ভব?
না। তবে অবশ্যই তা স্বাভাবিক নয়। নানা ধরনের স্নায়ুবিক অসুস্থতা, প্রস্রাবের থলির কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ করে যেসব স্নায়ু তার বৈকল্য বা সমন্বয়হীনতা, প্রস্রাব প্রদাহে, হরমোনের ভারসাম্যহীনতা বৃদ্ধি ও প্রস্রাবের থলির নানাবিধ অসুস্থতায় এ নিয়ন্ত্রণ সাময়িক বা স্থায়ীভাবে বিঘ্নিত হতে পারে। ব্যক্তি যখন এ নিয়ন্ত্রণ হারায়, তখন সে আর পারে না নিজ ইচ্ছানুসারে প্রস্রাব করতে। কখনো কখনো কারও কারও ক্ষেত্রে ঘটে অনভিপ্রেত অনিচ্ছা সত্ত্বেও নিজের অজান্তে প্রস্রাব ঝরে যাওয়ার মতো বিব্রতকর ঘটনা, যা কেবল অসুস্থতাই নয়, সামাজিকভাবে বিব্রতকরও বটে। তবে এসবই নিয়ন্ত্রণযোগ্য ও নিরাময়যোগ্য। প্রয়োজন শুধু সঠিক সময়ে সঠিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
স্বাভাবিক প্রস্রাব কেমন?
স্বাভাবিক প্রস্রাব পরিষ্কার, রংহীন বা হলুদাভ। প্রস্রাব পরিত্যাগের প্রক্রিয়াটি বাধাহীন, ব্যথাশূন্য সম্পূর্ণই স্বস্তিকর। প্রক্রিয়াটি শুরু করা যায় নিজ ইচ্ছায়, প্রয়োজন হয় না কোনো চাপ দেওয়ার। গতি থাকে একটানা, শেষ হয় ২০ সেকেন্ডে।
প্রক্রিয়াটি শেষ করে অনুভব করা যায় এক স্বাভাবিক পরিতৃপ্তি।
যদি প্রস্রাব হয় ঘোলা, অতিরিক্ত ফেনাযুক্ত বা অস্বাভাবিক দুর্গন্ধযুক্ত, প্রক্রিয়াটি যদি হয় ব্যথা, জ্বালা-যন্ত্রণাপূর্ণ, তাহলে এটি স্বাভাবিক নয়। এমনটা হতে পারে প্রস্রাবের প্রদাহসহ নানাবিধ অসুস্থতায়। এ ক্ষেত্রে প্রয়োজন সঠিক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ। প্রস্রাবের রং যদি লাল হয় বা থাকে, তাতে রক্তের অস্তিত্বের বিষয়টি গুরুত্বসহকারে বিবেচনায় নেওয়া জরুরি। ব্যথাশূন্য প্রস্রাব পরিত্যাগ-প্রক্রিয়ায় যদি প্রস্রাবে রক্ত থাকে, তবে তা নিতে হবে অতীব জরুরি ও ঝুঁকিপূর্ণ স্বাস্থ্যসমস্যা হিসেবে। সামান্য কালক্ষেপণও এ ক্ষেত্রে হতে পারে অসামান্য ক্ষতির কারণ। অথচ সময়োপযোগী ব্যবস্থা গ্রহণ, রোগনির্ণয় ও উপযুক্ত চিকিৎসায় এ ধরনের জীবনঘাতী অসুস্থতা নিয়ন্ত্রণ নয় শুধু, অনেক ক্ষেত্রেই নিরাময় সম্ভব।
কাজী রফিকুল আবেদীন
সহকারী অধ্যাপক, ইউরোলজি, ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব কিডনি ডিজিজেস অ্যান্ড ইউরোলজি